আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ অগাস্ট ২০২২, শনিবার |

kidarkar

যুক্তরাজ্যে গ্যাসের দাম বাড়ছে ৮০ শতাংশ

আন্তর্জাতি ডেস্ক : গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের উপযোগী এলপি গ্যাসের দাম ৮০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যের বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সরকারি সংস্থা দ্য অফিস অব গ্যাস অ্যান্ড ইলেকট্রিসিটি মার্কেটস (অফগেম)। শুক্রবার রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন অফগেমের শীর্ষ নির্বাহী জোনাথন ব্রেয়ারলি।

তিনি বলেছেন, আগামী অক্টোবর থেকে যুক্তরাজ্যের বাসিন্দাদের এলপি গ্যাস বাবদ বাৎসরিক ব্যয় ১ হাজার ২২৭ পাউন্ড খেকে পৌঁছাবে ৩ হাজার ৫১৯ পাউন্ডে (৩ লাখ ৯২ হাজার ৫৪৪ টাকা), যা বর্তমান ব্যয়ের চেয়ে শতকরা হিসেবে ৮০ শতাংশ বেশি।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের শাস্তি হিসেবে রাশিয়ার ওপর বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জেরে দেশটি থেকে জ্বালানি গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সরকার এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন জোনাথন ব্রেয়ারলি।

তবে গ্যাসের এই বিপুল পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধিতে যুক্তরাজ্যজুড়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।

দেশটির ভোক্তা অধিকারকর্মী মার্টিন লিউইস গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘দেশের সীমিত আয়ের লোকজন এই পরিমাণ বাড়তি মূল্য পরিশোধ করতে পারবে না। আর যদি তারা রান্না ও ঘর গরম রাখার মতো গ্যাস না পায়, সেক্ষেত্রে এই শীতে বহু মানুষ মারা যাবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, যিনি আর মাত্র দু’সপ্তাহ দেশটির সরকারপ্রধান হিসেবে আছেন— শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ব্যাপারে সরকার ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী সাধারণ জনগণকে আসন্ন এই বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেবেন।

‘তবে আমি মনে করি, সবাইকে এই আর্থিক সহায়তা প্রকল্পের আওতায় আনা উচিত হবে না। দেশের ধনী লোকজনকে এই প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে,’ সংবাদসম্মেলনে বলেন জনসন।

গত মে মাসে যুক্তরাজ্যের সরকার ঘোষনা দিয়েছিল, চলতি শীতে জনগণকে বিদ্যুৎ ও গৃহস্থালী গ্যাসের বার্ষিক বিলে ৪০০ পাউন্ড মূল্যছাড় (ডিসকাউন্ট) দেবে সরকার।

তবে যদি সত্যিই গ্যাসের দাম এই পরিমাণ বাড়ানো হয়, সেক্ষেত্রে এই মূল্যহ্রাস সাধারণ জনগণের কতখানি উপকারে আসবে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।

রাশিয়া থেকে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ইউরোপের অন্যান্য দেশে গ্যাসের দাম বাড়লেও যুক্তরাজ্যে তা বাড়ছে রকেটগতিতে। যুক্তরাজ্য বিশেষভাবে গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল এবং সাম্প্রতিক এই মূল্যবৃদ্ধিতে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে দেশটির জনগণের।

এদিকে, এই পরিস্থিতিতে জনগণকে কীভাবে সহায়তায় দেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের দুই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী লিজ ট্রাস ও ঋষি সুনাকের মধ্যে। সুনাক সাধারণ নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের পক্ষে, অন্যদিকে ট্রাস আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিবর্তে কর কমানোর পক্ষে।

বিরোধী দল লেবার পার্টি আসন্ন এই বিপর্যয়ের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। পার্টির মুখপাত্র র‌্যাচেল রিভস রয়টার্সকে বলেন, ‘সরকারের এখন উচিত দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.