আজ: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ অগাস্ট ২০২২, রবিবার |

kidarkar

আগস্টের ২৫ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রেমিট্যান্স আনতে বিভিন্ন ছাড় ও সুবিধা দেওয়ার পর মিলছে ইতিবাচক সাড়া। ফলে চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ২৫ দিনে ১৭২ কো‌টি ৯৩ লাখ (১ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ৯৫ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় দাঁড়াবে ২১৪ কোটি ডলার।

রোববার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলারের রেট ব্যাংকের চেয়ে খোলা বাজারে বেশি ব্যবধান থাকে। তখন বৈধ চ্যানেলের চেয়ে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেশি আসে। এখন এক ডলার রেমিট্যান্সের বিপরীতে ব্যাংক ৯৬ থেকে ৯৮ টাকা দিচ্ছে। সঙ্গে যোগ হচ্ছে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা। সব মিলিয়ে ১০০ টাকার মতো পাওয়া যায়। কিন্তু খোলা বাজারে ডলার ১১০ থেকে ১১১ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর মানে ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে ভিন্ন পথে রেমিট্যান্স এলে বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ কম। যদি বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ব্যবধান কমানো যায় তাহলে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি আসবে। তাই যেকোনো মূল্যে ব্যাংকের সঙ্গে খোলা বাজারের ডলারের রেটের ব্যবধান কমানোর পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্টরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, আগস্টের প্রথম ২৫ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৩৮ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোতে এসেছে ৬৪ লাখ ডলার। বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে এসেছে দুই কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।

চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এরপর অগ্রণী ব্যাংকে ১১ কোটি ডলার, সিটি ব্যাংকে প্রায় ১১ কোটি, ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার।
এর আগে গত মাস জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০৯ কো‌টি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পা‌ঠি‌য়ে‌ছেন। স্থানীয় মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

জুলাইয়ে তার আগের মাস জুনের চেয়ে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বেশি এসেছে। জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। তার আগের মাস মে-তে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ের তুলনায় আগের বছরের জুলাইয়ে ২২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের জুলাই মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিল ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাং‌কের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নিরসনে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধারাবাহিক কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।

তবে বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য নিচ্ছে ৯৭ থেকে ৯৮ টাকা পর্যন্ত, নগদ ডলার বিক্রি করছে ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা, আর ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১১ টাকা।

সবশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তিন হাজার ৯৩৬ কোটি (৩৯ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন) ডলার। প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুত এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে প্রায় ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.