আজ: শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪ইং, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, রবিবার |

kidarkar

২০২১ সালে উবার দেশের অর্থনীতিতে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার অবদান রেখেছে

করোনার সময়ে অর্থাৎ ২০২১ সালে উবার দেশের অর্থনীতিতে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার অবদান রেখেছে। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উবারের প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উবাবের প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সিনিয়র সচিব এ এম জিয়াউল আলম। প্রতিবেদনটি করেছে ‍যুক্তরাজ্যভিত্তিক নীতি গবেষণা সংস্থা পাবলিক ফার্স্ট।

গবেষণায় বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অবদান রাখার মাধ্যমে কীভাবে উবার যাত্রী, চালক ও সমাজের জন্য অন-ডিম্যান্ড অর্থনীতির পরিবর্তনে সাহায্য করেছে উবার। অর্থনৈতিক অবদান, কনজিউমার সারপ্লাস, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবহারকারী ও চালকদের প্রাপ্ত উপকারের পেছনের কারণগুলোকে গভীরভাবে বিবেচনা করে প্রতিবেদন করা হয়েছে।

তাতে দেখা গেছে, উবারের মাধ্যমে চালকদের উপার্জনের প্রভাব এবং বৃহত্তর পরিসরে কোম্পানির বিশাল সরবরাহ ব্যবস্থায় পরোক্ষ ও বহুমুখী প্রভাব উভয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একই বছরে উবারের রাইড কনজিউমার সারপ্লাসে ৭ হাজার কোটি টাকা উৎপাদন করেছে। যা দেশের জিডিপির দশমিক ২৫ শতাংশ।

প্রতিবেদন বলা হয়, ৯০ শতাংশ যাত্রী বলেন, যাতায়াতকালীন স্বস্তি তাদের উবার ব্যবহার করার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এতে বছরে উবার যাত্রীদের এক কোটি ৭০ লাখ ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশি যাত্রীদের মতে, গত এক দশকে পরিবহন খাতে তাদের দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবনটি হলো রাইড শেয়ারিং। রাইড শেয়ারিংয়ের ৭৩ শতাংশ চালক বলেন, ২০২১ সালে তারা উবার নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। এর মাধ্যমে গত বছর তারা অতিরিক্ত ৫২ দশমিক ২ কোটি টাকা আয় করেছেন। যা তাদের সম্ভাব্য পরবর্তী সেরা বিকল্প আয় বা কাজের উৎসের চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি।

৯০ শতাংশ নারী যাত্রী জানান, তাদের উবার বেছে নেওয়ার পেছনে নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ৭২ শতাংশ নারী যাত্রী একমত যে, রাতে দেরি করে বাড়ি পৌঁছানো এখন আগের তুলনায় সহজ।

ব্যক্তিগত গাড়ি নেই এমন ৮৪ শতাংশ যাত্রী বলেন, উবারের মতো রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের সহজলভ্যতার কারণে তারা নিজেদের গাড়ি না কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন।

‘বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে উবারের প্রতিবেদন প্রকাশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশের ব্যক্তিগত ভাড়া চালিত ট্যাক্সি ক্যাবের অভাব ছিল, সেটা উবার পূরণ করেছে। বাংলাদেশের ব্যবসা শুরুর পর থেকে গ্রোথ ভালো হয়েছে উবারের। এখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসছে এই সেবায়।

উবার প্রাইভেট সেক্টরের মানুষের ভোগান্তি কমিয়েছে, চলাচলের পথ সহজ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উবারের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। আরও বৃদ্ধির এখনো বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করছি, উবার এই সুযোগটি কাজে লাগেবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সিনিয়র সচিব এ এম জিয়াউল আলম।

তিনি তার বক্তব্য বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব কাজ করে যাচ্ছে আইসিটি বিভাগ। ২০২১ সালে আইসিটি বিভাগ ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করেছে। ২০২৫ সালে ৫ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ অর্থ আয় করার টার্গেট রাখা হয়েছে। আশা করি এই টার্গেট পূরণ করতে সক্ষম হবো।

অনুষ্ঠানে উবারের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পাবলিক পলিসি ও গভর্নমেন্ট রিলেশনস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর মাইক অরগিল এই প্রতিবেদন সম্পর্কে বলেন, ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সুযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে উবার। কিন্তু আমাদের অবদানের ব্যাপ্তি সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা ছিল না।

এই গবেষণার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চালক, যাত্রী ও অর্থনীতির ওপর অবদানের সার্বিক প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটি নিজের কাজের সময়ের ওপর নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব তুলে ধরে। পাশাপাশি, এর মাধ্যমে আরও তুলে ধরা হয়েছে, যাতায়াতের উন্নত ব্যবস্থা কীভাবে মানুষকে নিরাপদে চলাচলের সুযোগ করে দেয় এবং অর্থনীতিতে অবদান রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের সমাজের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য আমাদের প্রযুক্তি ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর প্রতিজ্ঞা আরও দৃঢ় হয়।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.