বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশনের তালিকাচ্যুতির আবেদনে ডিএসইর মতামত চায় বিএসইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হওয়ার জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশন লিমিটেড। আর এই আবেদনের ওপর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কাছে মতামত চেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সম্প্রতি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। সেই সঙ্গে বিষয়টি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) চেয়ারম্যান ও সিওও’কে অবহিত করা হয়েছে।
তথ্যমতে, বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশন বর্তমানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত রয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে ওটিসি মার্কেট থেকে বের হয়ে যেতে দরকারি কাগজপত্রসহ বিএসইসিতে আবেদন করে বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশন। ওই আবেদনের সাথে একটি পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বিএসইসিতে জমা দিয়েছে কোম্পানিটি। পাশাপাশি ডিএসইকে এই পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদনে ঠিক আছে কিনা সেটা আরেকজন নিরীক্ষক দিয়ে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
এদিকে ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেবিলাইজেশন ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের অর্থের সমপরিমাণ টাকা এবং সকল অবণ্টিত নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ জমা দেয়ার পর বের হয়ে যাওয়ার অনুমতি পাবে কোম্পানিটি। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিটিকে পুনর্মূল্যায়ন সম্পন্ন করার বিষয়েও বলা হয়েছে।
বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশন চলতি বছরের ২ আগস্ট টোটাল সার্ভে প্রাইভেট লিমিটেড থেকে একটি পুনর্মূল্যায়নের রিপোর্ট এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নথিসহ পুঁজিবাজার থেকে বের হওয়ার জন্য আবেদন করেছে, যা ন্যায়সঙ্গতভাবে বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। তাই ডিএসইকে ২০১৩ আগস্টে জারি করা বিএসইসির নির্দেশনা অনুসরণ করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কোম্পানিটির পুনর্মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জারি করা বিএসইসির নির্দেশনা অনুসারে কোম্পানিটির তালিকাচ্যুত করার পরিকল্পনার বিষয়ে মতামত দিতে বলা হলো।
এ ছাড়া আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানির পুনর্মূল্যায়ন করার পরে কোম্পানিটির তালিকাচ্যুত করার পরিকল্পনায় বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তির জন্য দুইটি নির্দেশনা অনুসরণ করার বিষয়ে চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিএসইসি।
নির্দেশনা দুইটির মধ্যে প্রথমটি হলো- সিএমএসএফে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের সমপরিমাণ অর্থ জমা দেওয়া সাপেক্ষে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হতে পারবে। দ্বিতীয়টি হলো- সিএমএসএফ সমর্পিত সিকিউরিটিজ বা কোম্পানির নগদ বা স্টক লভ্যাংশ পাওয়ার পরে সমস্ত বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তি করতে হবে।
বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশন ডিএসইতে ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি। ১৯৯১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল কোম্পানিটি। পরবর্তীতে কোম্পানিটির কার্যকরী কার্যক্রম পরিচালনা এবং লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান ট্রেডিং বোর্ড থেকে ওটিসি মার্কেট পাঠানো হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বিলুপ্ত ঘোষণা করে। ফলে ওটিসি মার্কেটের আওতাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে এসএমই প্ল্যাটফর্ম, অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তর এবং তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ওটিসি মার্কেট থেকে বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশনকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।
কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১ লাখ টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারসংখ্যা ১ লাখ। এরমধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৭০.৮৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯.১২ শতাংশ শেয়ার আছে। কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৪০ টাকায়।