আজ: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবার |

kidarkar

ইয়েমেনে আল-কায়েদার হামলা, নিহত ২৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কয়েক মাস ধরে তুলনামূলক শান্ত থাকার পর মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেনে ফের রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালালে ২৭ জন নিহত হয়।

নিহতদের মধ্যে ২১ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধা এবং বাকি ছয় জন আল-কায়েদার ইয়েমেন শাখার সদস্য। ইয়েমেনের সরকার ও নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

ওই সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, আল-কায়েদা ইন দ্য অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা (একিউএপি) ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় আবিয়ান প্রদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত-প্রশিক্ষিত সিকিউরিটি বেল্ট নামক একটি গ্রুপের বিভিন্ন অবস্থানে হামলা করে। এতেই এই প্রাণহানি হয়।

সন্ত্রাসী এই গোষ্ঠীটি ছয় মাসেরও বেশি সময় আগে একই প্রদেশে অপহরণ করা জাতিসংঘের একজন কর্মীর একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ করে। আর সেই ঘটনার কয়েকদিন পরেই এই সহিংসতার ঘটনা ঘটল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইয়েমেনের একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, প্রায় তিন ঘণ্টার লড়াইয়ে ‘এক কর্মকর্তাসহ (সিকিউরিটি বেল্ট) ২১ জন এবং আল-কায়েদা যোদ্ধাদের মধ্যে ছয়জন নিহত হয়েছে’। দুই নিরাপত্তা সূত্র নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।

একিউএপি এবং ইসলামিক স্টেট গ্রুপের অনুগত সন্ত্রাসীরা দেশটিতে বিশৃঙ্খলা বাড়িয়েছে।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেন ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ।

উল্লেখ্য, নিরাপত্তা বেল্ট নামক এই গ্রুপটি দক্ষিণ ইয়েমেনের একটি শক্তিশালী বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী। এই বাহিনী দেশটিতে জিহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি সন্ত্রাসীদের শহর থেকে গ্রামীণ এলাকায় পিছু হটতে বাধ্যও করেছে তারা।

১৯৯০ সালে পুনর্মিলন হওয়ার আগপর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেনে বিভক্ত ছিল।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.