আজ: সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ইং, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবার |

kidarkar

ইস্যুমূল্যের নিচে দর, তবু বসুন্ধরা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮০ টাকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যে শেয়ার কিনেছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা পেয়েছেন ১০ শতাংশ ছাড়ে ৭২ টাকায়। আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কোম্পানিটি হারানো দর ফিরে পেতে থাকে। এই সময় ৫১ টাকা থেকে বেড়ে ৬৬ টাকা হয়। এই উত্থানের পেছনে কারসাজি আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতে বলেছে বিএসইসি।
গত এক মাসে অনেকটা বাড়লেও এখন ইস্যুমূল্যের নিচে রয়েছে বসুন্ধরা পেপার মিলসের শেয়ারদর। এর মধ্যেও এই দর বৃদ্ধির পেছনে কোনো কারসাজি আছে কি না, সেটি জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘এটা একটা রুটিন ওয়ার্ক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসির পক্ষ থেকে শেয়ারদর ও ভলিউম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে, কোনো অনিয়ম আছে কি না সেটা জানার জন্য। এটা বিশেষ কোনো তদন্ত নির্দেশনা নয়।’
তবে বিএসইসির এই নির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে এ কারণে যে, ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে যত টাকা মূল্যে একেকটি শেয়ার ইস্যু করা হয়, বর্তমান শেয়ারদর এর চেয়ে কম।
বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮০ টাকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যে শেয়ার কিনেছেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তা পেয়েছে ১০ শতাংশ ছাড়ে ৭২ টাকায়। প্রথম দিন শেয়ারটি লেনদেন হয় ১৪০ টাকায়। কিন্তু এরপর তা ক্রমাগত দর হারাতে হারাতে চলে আসে ৪০ টাকার নিচে।
তবে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হতে প্রতিষ্ঠানটির ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনতে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রস্তাব দেয়ার পর থেকে হারানো শেয়ারদর অনেকটাই ফিরে পাচ্ছে বসুন্ধরা পেপার।
গত ২৪ আগস্ট শেয়ারদর ছিল ৫১ টাকা ৭০ পয়সা। ৩১ আগস্ট দর দাঁড়ায় ৬৬ টাকা ১০ পয়সা। এই উত্থানকে অস্বাভাবিক কি না, সেটি ভাবতে থাকে বিএসইসি।
তবে শেয়ারদর এরপর আরও খানিকটা বেড়েছে। একপর্যায়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ইস্যুমূল্যের চেয়ে কিছুটা বেড়ে ৭৯ টাকা ২০ পয়সায় ওঠে। যদিও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যে মূল্যে শেয়ার কিনেছেন, তার চেয়ে ৮০ পয়সা কম গত তিন বছরের সর্বোচ্চ এই দর। সোমবার দর দাঁড়িয়েছে ৬৯ টাকা ৮০ পয়সা, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ইস্যু করা দরের চেয়ে কম।
হারানো দর দ্রুত ফিরে পাওয়ার পর দর বৃদ্ধির বিষয়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানির কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছিল। এর জবাবে ৪ সেপ্টেম্বর কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
এ বিষয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘যখন কোনো শেয়ারের দাম লিস্টিং প্রাইসের নিচে চলে গেলে, যখন বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলে বা র‌্যালি শুরু হলে সেসব শেয়ারের দর ফিরে আসে। মানুষ তখন খোঁজে কোনটার প্রাইস লিস্টিংয়ের নিচে আছে। অনেক সময় এই সাইকোলজিক্যাল ব্যাপারটার সুযোগ নেয় গ্যাম্বলার বা বড় মার্কেট প্লেয়াররা। ফলে বসুন্ধরার শেয়ারদরকে এখনও ওভারভ্যালুড বলা সমীচীন নয়। যদি এটা লিস্টিং প্রাইসের ওপরে চলে যায়, ধরা যাক ১০০ টাকা অতিক্রম করছে তাহলে এটা ঠিক হচ্ছে না বলা যায়।’
নাম প্রকাশ করার অনুরোধ জানিয়ে আরেকজন ব্রোকার বলেন, ‘বিএসইসির এই আচরণ শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো। কত শেয়ারের দাম আকাশচুম্বী হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে কোনো তৎপরতা নেই। অথচ যেটার প্রাইস লিস্টিং দরের নিচে আছে, এবং প্রাইস ওই দরে না আসার কারণ নেই, সেখানে তৎপরতা দেখাচ্ছে।’
২০১৮ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরে শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা ৬৩ পয়সা আয়ের বিপরীতে ২ টাকা, ২০১৯ সালে ১ টাকা ৬৮ পয়সার বিপরীতে ১ টাকা ৫০ পয়সা, ২০২০ সালে ১ টাকা ৬৪ পয়সার বিপরীতে ১ টাকা এবং ২০২১ সালে ২ টাকা ৩৭ পয়সার বিপরীতে ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানি।
১৭৩ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ৯১ হাজার ৪৪১।
সোমবার বসুন্ধরা বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকায়। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৪৬৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা

১ টি মতামত “ইস্যুমূল্যের নিচে দর, তবু বসুন্ধরা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.