এক সপ্তাহের ব্যবধানে বক্তব্য পরিবর্তন করেছে আজিজ পাইপস
নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সপ্তাহের ব্যবধানে বক্তব্য পরিবর্তন করেছে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আজিজ পাইপস লিমিটেড।
আজিজ পাইপস লিমিটেডের শেয়ারের অস্বাভাবিক দামবৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়েছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর উত্তরে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ গত ২০ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিল, তাদের কাছে কোনো সংবদেনশীল তথ্য নেই। এরই ছয় দিনের মাথায় বন্ধ কারখানায় পুনরায় উৎপাদন শুরুর কথা জানালো প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানিটি জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে ১০ মাস বন্ধ থাকার পর ১ অক্টোবর থেকে নিজেদের কারখানায় পুনরায় উৎপাদন শুরু করবে আজিজ পাইপস।
বিষয়টি প্রতারণা বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি বলেন, বন্ধ থাকা একটি কোম্পানি মাত্র ৬ দিনে চালু করা সম্ভব না। চালু করতে হলে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কাঁচামাল আমদানি করতে হয়।
তিনি বলেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে। তারা খবরটি তাদের ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছে। ঘনিষ্ঠরা শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়েছে। আরও সাধারণ বিনিয়োগকারী কাছে বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের উচিত এই কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানি সচিব এএইচএম জাকারিয়া বলেন, রোববার বিকেলে (২৫ সেপ্টেম্বর) কোম্পানির পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, বন্ধ থাকা কারখানা চালু করা হবে। এর আগের আমরা জানতাম না। তাই ২০ সেপ্টেম্বর বলেছিলাম, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আমাদের কাছে নেই।
বোর্ড বলছে, আগের চেয়ে এখন কাঁচামালের দাম কমেছে। তাই আবার উৎপাদন শুরু করবে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর আজিজ পাইপসের শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৯৬ টাকা। সর্বশেষ গতকাল (২৫ সেপ্টেম্বর) লেনদেন হয় ১৪০ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ শেয়ার প্রতি দাম বেড়েছে ৪৪ টাকা ৩০ পয়সা। তবে ১২-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কারখানা চালুর গোপন খবরে আজিজ পাইপসের শেয়ারের দাম ১৪৭ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি লোকসান কাটাতে গত বছরের ৮ নভেম্বর কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। কোম্পানিটির ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, ব্যাংক লোন জটিলতা, আর্থিক সংকট কাঁচামাল এবং মূলধনের সংকটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজিজ পাইপসের মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার ১২৫টি। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আর পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার।
করোনার সময় থেকে লোকসানে পতিত হওয়া কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। তিন প্রান্তিকে আজিজ পাইপসের শেয়ার প্রতি লোকসান ১ টাকা ৯৩ পয়সা।