পুঁজিবাজারে বিলিয়ন ডলার মূল্যের কোম্পানিগুলো ফ্লোর প্রাইসে পৌঁছেছে
শাহ আলম নূর : দেশের পুঁজিবাজারে বিলিয়ন ডলার মূল্যের কোম্পানিগুলোও ফ্লোর প্রাইসে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (২৭সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বিলিয়ন ডলার বাজার মূলধনের সহ আটটি কোম্পানির মধ্যে ছয়টির শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করেছে।
ফ্লোর প্রাইস স্পর্শ করা কোম্পানি হলো গ্রামীণফোন, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি), স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, রবি আজিয়াটা এবং রেনাটা লিমিটেড, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, এবং বেক্সিমকো লিমিটেড।
শেয়ার বাজারের অব্যাহত পতন থেকে রক্ষা করতে জুলাই মাসে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক ফ্লোর প্রাইসের পুনঃপ্রবর্তিত হয়।
এই বছরের ২৮ জুলাই, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক তার সর্বশেষ পদক্ষেপে শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস পুনঃপ্রবর্তন করেছে। যা এখনও রয়েছে। বাজারের অস্থিরতা রোধ করার জন্য এটি একটি পরিকল্পিত পরিমাপ।
বিএসইসি তার আদেশে বলেছে, “যে কোনো তালিকাভুক্ত শেয়ার লেনদেন মূল্য ২৮ জুলাই, ২০২২ এর সমাপনী মূল্যের গড় এবং চারটি ব্যবসায়িক দিবসের অবিলম্বে শেষ মূল্য নির্ধারণ করা হবে।”
বিএসইসি‘র নির্দেশে বলা হয়েছে “প্রতিটি শেয়ারের জন্য গণনা করা গড় মূল্য, ফ্লোর মূল্য এবং সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমা হিসাবে বিবেচিত হবে” ।
“সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সর্বশেষ এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে,” বিএসইসি এমনটিই জানিয়েছে।
এর আগে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ১৯ মার্চ, ২০২০ এ কোভিড -১৯ প্রাদুর্ভাবের সময় শেয়ার মূল্যের অব্যহত পতনকে সীমিত করার লক্ষে অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছিল, যখন ডিএসইএক্স ৩০০০ স্তরের নীচে নেমে গিয়েছিল।
যখন একটি ফ্লোরের মূল্য নির্ধারণ করা হয়, তখন কোনো কোম্পানির শেয়ার নির্ধারিত মূল্যের নিচে লেনদেন করা হবে না। যদি একটি কোম্পানির শেয়ারের মূল্য ফ্লোর প্রাইসের সাথে লেনদেন হয়, তাহলে সেটি হবে সেই কোম্পানির সর্বনিম্ন মূল্য।
এছাড়াও, বিএসইসি জানিয়েছে, সার্কিট ব্রেকারের উপরের সীমা এবং অন্যান্য বিদ্যমান শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে।
শেষার বাজারে বাজার মূলধনের দিক থেকে গ্রামীণফোনের শীর্ষে অবস্থান করেছে। কোম্পানিটির লেনদেন গতকাল ২৮৬.৬ টাকায় বন্ধ হয়েছে, যা এটির ফ্লোর প্রাইস। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটরটির মার্কেট ক্যাপ দাঁড়িয়েছে ৩৮৬৯৯ কোটি টাকা, যা মোট ডিএসই মার্কেট ক্যাপের ৮.৬ শতাংশ।
একটি কোম্পানির বাজার মূলধন গণনা করা হয় বকেয়া শেয়ারের মোট সংখ্যাকে তার শেয়ারের বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে গুণ করে।
২৮ জুলাই, বিএসইসি বাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য দামের পরিবর্তন রোধ করতে ফ্লোর প্রাইজ পুনরায় চালু করে বাজারে হস্তক্ষেপ করেছিল। প্রতিটি শেয়ারের জন্য গণনা করা গড় মূল্যকে ফ্লোর প্রাইজ এবং সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ১০৪৭.৭ টাকা, যা কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস। স্থানীয় ইলেকট্রনিক জায়ান্ট– মার্কেট ক্যাপ অনুসারে দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানির বাজারমূল্য ছিল ৩১৭৩৭কোটি টাকা।
বিএটিবিসি এর শেয়ারের দাম ৫১৮.৭ টাকা, স্কয়ার ফার্মার ২০৯.৮ টাকা, রবি আজিয়াটা ৩১ টাকা এবং রেনাটা ১৩০৩.২ টাকায় বন্ধ হয়েছে।
ফ্লোর প্রাইস পুনঃপ্রবর্তনের সময়, বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বলেছিলেন যে দেশের শেয়ার বাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারির পরিমান বেশি। শুধুমাত্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারির সুরক্ষার জন্য কমিশনকে শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস পুনরায় চালু করতে হয়েছে।