আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১১ অক্টোবর ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

মার্কিন কংগ্রেসে আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের শাস্তি দাবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে কান না দিয়ে জ্বালানি তেলের উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দুই দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা সিন ক্যাস্টেন, টম ম্যালিনস্কি ও সুসান ওয়াইল্ড সোমবার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে একটি বিল উপস্থাপন করেছেন। সেই বিলে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মার্কিন সেনাঘাঁটি থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার ও এই দু’টি দেশের কাছে যেসব অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র বিক্রির চু্ক্তি হয়েছিল— সেসব বাতিলের আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিলে বলা হয়, ‘সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিরক্ষা সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যার কারণ আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। যদি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পুতিনকে সহযোগিতা করতে চান, তাহলে তার কাছ থেকেই এই দু’টি দেশের প্রতিরক্ষা সুবিধা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়াকে শাস্তি দিতে দেশটির জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ; এবং এ কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে স্বাভাবিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের তেলের ওপর নির্ভর করতে চাইছে পশ্চিম।

গত জুলাই মাসে  সৌদি সফরে গিয়েছিলেন বাইডেন, সেই সফরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে তেলের উত্তোলন আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। যুবরাজও তখন আপত্তি করেননি।

এদিকে রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞার থাকায় প্রথমদিকে ব্যাপক লাভের মুখ দেখলেও যুদ্ধের জেরে গত তিন মাস ধরে ডলারের মান লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি ও তার ফলে বিভিন্ন দেশ তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার।

মাসের পর মাস ধরে মন্দাভাব চলতে থাকায় অবশেষে তেলের উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি তেলের উত্তোলন ও রপ্তানিকারক দেশসমূহের জোটের ওপেক প্লাস। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তেলের দৈনিক উত্তোলন ২০ লাখ ব্যারেল (শতকরা হিসেবে ২ শতাংশ) হ্রাস করতে একমত হয় জোটের সদস্যরাষ্ট্রসমূহ।

ওপেক প্লাসের ৩ প্রভাবশালী সদস্য সৌদি আরব, আমিরাত ও রাশিয়া এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

তবে ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অভিযোগ, রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অনুরোধকে অবজ্ঞা করেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ওপেক প্লাসের এই অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হতাশ।’

সৌদি ও আমিরাত— উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের এশীয় মিত্র হিসেবে পরিচিত। দু’টি রাষ্ট্রেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি আছে। সম্প্রতি সৌদির কাছে এমআইএম-১০৪ প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম এবং আমিরাতাতের কাছে টার্মিনাল হাই অলটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ব্যালেস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টর বিক্রির চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই অত্যাধুনিক দুই সমরাস্ত্র বিক্রির অনুমোদনও দিয়েছিল।

কিন্তু শনিবার কংগ্রেসে যে বিল তোলা হয়েছে, সেটি পাশ হলে এসব অস্ত্র আর পাবে না মধ্যপ্রাচ্যের দুই উপসাগরীয় দেশ।

সূত্র: আল-জাজিরা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.