বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলার সম্ভব :ডিসিসিআই সভাপতি 
নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা দূর করা ও প্রতিনিধিদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নতি করা সম্ভব বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকা সফররত ভিয়েতনামের ৩১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাথে ‘বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বাণিজ্য আলোচনা সভা’ এবং ‘বিটুটি ম্যাচ-মেকিং সেশন’ অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। ডিসিসিআই আয়োজিত বাণিজ্য আলোচনায় ভিয়েতনামের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডু হুয়াক হাং।
অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বার সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০২১ অর্থবছরে দুদেশের বাণিজ্য ছিল ৭৩৯.৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসন, বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের আদান-প্রদান এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।
এ সময় বাংলাদেশের কৃষি, জাহাজ নির্মান, ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, ঔষধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং হালকা-প্রকৌশল প্রভৃতি খাতে ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের একক ও যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বাদন জানান ডিসিসিআই সভাপতি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন উল্লেখ করেন, ভিয়েতনামের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ এবং কোভিড মহামারীকালীন সময়েও দুদেশের ব্যবসা তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম নয়মাসে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে এটা আরো বৃদ্ধি পাবে। ডিসিসিআই আয়োজিত বিটুবি সেশন দুদেশের বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিদের মধ্যকার যোগাযোগ আরো সম্প্রসারণ করবে বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন। এছাড়া বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের ভিয়েতনামে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
ভিয়েতনাম প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডু হুয়াক হাং বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের মধ্যকার যোগাযোগ এখনও আশানুরূপ পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। এ অবস্থার উন্নয়নে তিনি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রতিনিধিদল প্রেরণের উপর জোরারোপ করেন।
ডু হুয়াক হাং বলেন, ঢাকা ও হ্যানয়ের মধ্যকার সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু করা সম্ভব হলে, দ্বিপাক্ষিক ব্যাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এ সময় তিনি জানান, ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের সাথে ১৫টি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করেছে এবং বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা তাঁর দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য স্বল্প শুল্ক সুবিধা ভোগ করে রপ্তানি করতে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি এস এম রহমান। ডিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি আরমান হক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়াও ভিয়েতনামের ৩১টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সাথে ঢাকা চেম্বারের সদস্যভুক্ত প্রায় ১০০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ আয়োজিত বিটুবি সেশনে যোগদান করেন, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরো সম্প্রসারণ হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে।