আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৯ নভেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি : তদন্ত দ্রুত শেষ করার নির্দেশ

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় তিন মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন কোনো প্রকার ব্যর্থতা ছাড়াই যথাযথ আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিবেদন দাখিলের পর উচ্চ আদালতে হলফনামা দিতে আদেশে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) তিনটি মামলায় বেসিক ব্যাংকের জিএম মোহম্মদ আলীর জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এ ঘটনায় করা ৫৬ মামলার মধ্যে ১২ মামলার আসামি ব্যাংকটির সাবেক জিএম মোহাম্মদ আলী। এর মধ্যে তিন মামলায় জামিন চেয়েছেন তিনি।

পরে জামিন শুনানিতে গত ৮ নভেম্বর হালনাগাদ তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে এ প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসিক ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা থেকে প্রায় ২০৭৭ কোটি ৩৪ লাখ ২ হাজার ৯৯১ টাকা যা সুদসহ ২৫৯০ কোটি ৪৯ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৩ টাকা আত্মসাতের দায়ে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে মোট ৫৬টি মামলা দায়ের করে।

এসব মামলায় ৮২ জন ঋণ গ্রহীতা ছাড়াও বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ফকরুল ইসলাম, ডিএমডি ফজলুস সোবহান, সাবেক ডিএমডি শেখ মঞ্জুর মোরশেদ, জিএম এ. মোনায়েম খান, জিএম মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহাম্মদ আলী চৌধুরীসহ ২৭ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।

বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখা, প্রধান শাখা, দিলকুশা শাখা এবং শান্তিনগর শাখাসহ মোট চারটি শাখার ঋণ কেলেঙ্কারির বিষয়ে গুলশান থানায় ২৩টি, মতিঝিল থানায় ১২টি ও পল্টন থানায় ২১টিসহ মোট ৫৬ টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা ২৭, ব্যবসায়ী ৮২ ও বেসরকারি সার্ভেয়ার ১১ জনসহ মোট ১২০ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মামলাগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ তদন্তাধীন আছে। মামলার তদন্ত দীর্ঘায়িত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো—আত্মসাৎকৃত অর্থ সম্পূর্ণরূপে নগদে উত্তোলনের মাধ্যমে টাকার অবস্থান গোপন করা হয়েছে। মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের শনাক্তকরণ ও তাদের জবানবন্দী গ্রহণ (১৬১ ধারায়) কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। সব সাক্ষীর কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

বর্ণিত মামলায় আলামত প্রচুর ও ব্যাংকের বিশাল পরিমাণ কাগজপত্র থেকে প্রকৃত সব আলামত শনাক্ত করা সময় সাপেক্ষ। এছাড়া প্রকৃত আসামি শনাক্তের প্রক্রিয়াটিও এ মামলায় বেশ জটিল। এছাড়া মামলার প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহের জন্য মালয়েশিয়ায় এমএলএআর করা হয়েছে। সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও আলামত এখনও পাওয়া যায়নি।

মামলাগুলোর আগের তদন্তকারী কর্মকর্তারা বদলি সূত্রে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ায় একাধিকবার তদন্তকারী কর্মকর্তাও পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাগুলোর তদন্ত কাজ এগিয়ে চলছে। আসামি ও আলামত শনাক্ত করা, সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ ও এমএলএআর’র পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশ থেকে মামলার প্রয়োজনীয় আলামত পাওয়া সাপেক্ষে এবং প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ করে যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

মোট ৫৬টি মামলায় আত্মসাৎকৃত অর্থের মধ্যে ১১৫ দশমিক ৭৮ কোটি টাকা উদ্ধার বা ব্যাংকে জমা করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.