আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩১ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার |

kidarkar

৮১ বছর পর বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হচ্ছে আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিবিসি বাংলা রেডিওর শেষ দুটি অধিবেশন প্রচারিত হবে আজ শনিবার রাতে। দীর্ঘ ৮১ বছর পর বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হতে যাচ্ছে।

সংবাদ ও সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠান ‘প্রবাহ’ আর ‘পরিক্রমা’ শেষবারের মত প্রচারিত হবে আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা এবং রাত সাড়ে ১০টায়।  অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন লন্ডনে মানসী বড়ুয়া আর ঢাকায় আকবর হোসেন।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে ব্যাপক পরিবর্তনের পটভূমিতে বিবিসি বাংলা রেডিও বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ার্ল্ড সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বাংলায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে।

বিবিসি বাংলার সম্পাদক সাবির মুস্তাফা বলেন, ‘বিবিসি বেশ কিছু দিন থেকে ডিজিটাল প্লাটফর্মের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে, এখন এই পরিবর্তনের প্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত করা হবে।’

১৯৪১ সালের ১১ অক্টোবর একটি সাপ্তাহিক নিউজলেটার দিয়ে বিবিসি বাংলা রেডিও যাত্রা শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্রান্তিকালে মিত্র পক্ষের বক্তব্য ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল বিবিসি বাংলা রেডিওর যাত্রা।

বাংলাদেশের মানুষের মাঝে বিবিসি নামটি সব চেয়ে বেশি পরিচিতি পায় ১৯৭১ সালে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। বিবিসির খবরের ওপর শ্রোতাদের আস্থা আর বিবিসি বাংলা রেডিওর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। মানুষ তখন যুদ্ধের খবরের জন্য পুরোপুরি নির্ভর করত বিবিসি বাংলার ওপর।

বিগত আট দশকে বিবিসি বাংলার রেডিও অনুষ্ঠানমালা এবং ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। রেডিওর চূড়ান্ত সম্প্রসারণ ঘটে ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে যখন চতুর্থ একটি দৈনিক অধিবেশন শুরু করা হয়। তার চার বছরের মাথায় সকালের দুটি রেডিও অধিবেশন লন্ডন থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়, এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিবিসি বাংলার সাংবাদিক সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ ঘটে।

তবে রেডিওর শ্রোতা কমে যাওয়ায় বিবিসি বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে। চ্যানেল আই-এর সহযোগিতায় ‘বিবিসি প্রবাহ’ নামক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান নিয়ে ২০১৫ সালে বিবিসি বাংলা বাংলাদেশের টেলিভিশন জগতে প্রবেশ করে।

কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রেডিও শ্রোতা সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে, বিশেষ করে সংবাদ এবং সাময়িক প্রসঙ্গের ক্ষেত্রে। বিবিসির গবেষণায় দেখা গেছে বিভিন্ন দেশে মানুষ সংবাদের চাহিদা মেটানোর জন্য টেলিভিশন এবং ডিজিটাল মাধ্যমকে বেছে নিচ্ছেন।

সাবির মুস্তাফা বলেন, ‘বিবিসি বাংলা রেডিও ঘিরে অনেক স্মৃতি, অনেক আবেগ রয়েছে। কিন্তু যারা সংবাদের প্রতি আগ্রহী, তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য বিবিসি রেডিও বন্ধ করার মত কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাস্তবতার আলোকে বিবিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা রেডিও বন্ধ করে লোকবল ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়োজিত করতে।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.