শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই, ৩০০ কোটি টাকার নিচে লেনদেন
নিজস্ব প্রতিবেদক : দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসইতে) সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে লেনদেন কমে আবার তিনশ কোটি টাকার নিচে নেমেছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সবকটি মূল্যসূচক কমলেও অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।
এর আগে নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথমদিন রোববার সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়। সেই সঙ্গে ডিএসইতে দুইশ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। বছরের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও সবকটি সূচকের পতন হয়। আর লেনদেন কমে দেড়শ কোটি টাকার নিচে নেমে আসে। এতে ২০২০ সালের ৭ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটে।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক ও লেনদেন উভায় বাড়ে। তবে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দুইশ কোটি টাকার নিচেই থাকে। পরের কার্যদিবস বুধবারও মূল্যসূচক ও লেনদেন বাড়ে। তবে লেনদেন তিনশ কোটি টাকার ঘর স্পর্শ করতে পারেনি।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন তিনশ কোটি টাকার ঘরে গেলেও পতন মূল্যসূচকের। ফলে বছরের প্রথম সপ্তাহ হতাশা দিয়েই পার করতে হয় শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের। বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসও বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি দিতে পারলো না।
এদিন লেনদেন শুরুর দিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। ফলে লেনদেনের ১৮ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
তবে প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার ধারা অব্যাহত থাকে। অবশ্য শেষ আধাঘণ্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় সূচকের বড় পতন হয়নি।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৪০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২২টির। আর ১৬৮টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৮৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩১৮ কোটি ১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এডিএন টেলিকমের ১৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা পেপার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স, আমরা নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, জেনেক্স ইনফোসিস এবং ওরিয়ন ফার্মা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৯টির এবং ৮১টির দাম অপরিবর্তিত।