আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

চীনের ৩য় জনবহুল প্রদেশের ৯০ শতাংশই করোনায় আক্রান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনে ব্যাপকভাবে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। মূলত জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি। তবে ভাইরাসে সংক্রমণের নির্দিষ্ট কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে না বেইজিং।

এই পরিস্থিতিতে চীনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা যে তথ্য সামনে এনেছেন তা বেশ ভয়ঙ্কর। তিনি বলেছেন, চীনের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল প্রদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই কোভিড-১৯-এ সংক্রামিত হয়েছেন। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সোমবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

চীনের মধাঞ্চলীয় হেনান প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনের পরিচালক কান কোয়ানচেং সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত, প্রদেশের কোভিড সংক্রমণের হার ৮৯ শতাংশ।’

এএফপি বলছে, জনসংখার বিচারে চীনের তৃতীয় বৃহত্তম প্রদেশ হেনান। প্রদেশটির মোট জনসংখ্যা ৯৯.৪ মিলিয়ন। আর সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির পর হেনানের প্রায় ৮৮.৫ মিলিয়ন মানুষ এখন করোনায় সংক্রামিত হতে পারে।

সোমবার কান আরও বলেন, জ্বর নিয়ে ক্লিনিকগুলোতে মানুষের ভিড় সবচেয়ে বেশি ছিল গত ১৯ ডিসেম্বর। তার দাবি, ‘এর পর থেকে ক্লিনিকে মানুষের চাপের ক্ষেত্রে ক্রমাগত নিম্নগামী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে’।

গত ডিসেম্বরের শুরুতে আকস্মিকভাবে জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে চীন। প্রত্যেক দিন অসংখ্য মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দেশটিতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এছাড়া করোনা সংক্রমণের লাগামহীন উত্থানে দেশটির হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে বলেও খবর বের হয়েছে। করোনার উত্থানের সাথে সাথে দেশটির মরদেহ পোড়ানোর জন্য নির্ধারিত শ্মশানেও প্রচণ্ড ভিড় শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে চলতি জানুয়ারিতে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর চীন এই প্রথম ভ্রমণকারীদের জন্য তার সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দিয়েছে। অর্থাৎ বিদেশ থেকে ভ্রমণকারীদের চীনে যাওয়ার পর এখন আর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না এবং চীনা নাগরিকরাও এখন বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন।

তবে ভ্রমণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে পিসিআর টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ দেখাতে হবে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীন সরকার ২০২০ সালের মার্চ মাসে ভ্রমণের ওপর এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশটিতে যখন চন্দ্র নববর্ষ পালিত হচ্ছে তখনই সর্বশেষ এই কোভিড বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া হলো। মূলত নতুন বছর উদযাপন উপলক্ষে এসময় প্রচুর মানুষ চীনের ভেতরে ভ্রমণ করে থাকেন। এসময় লোকজন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বাড়িতে যান।

আর তাই চন্দ্র নববর্ষ উদযাপন করার কারণে চীনে ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এছাড়া চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, প্রাক-ছুটির ভ্রমণের প্রথম ঢেউয়ে গত শনিবার ৩৪.৭ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে ভ্রমণ করেছে বলে দেশটির সরকারি তথ্যে দেখা গেছে। যা গত বছরের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।

গত সপ্তাহে চীনের সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বরের শুরুতে চীন কোভিড নীতি শিথিল করার পর থেকে দেশটিতে মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং ৩০ জন মারা গেছে।

অবশ্য চীন গত মাসে কোভিড সংক্রান্ত মৃত্যু ঘোষণার জন্য নিজেদের মানদণ্ড পরিবর্তন করে। এর ফলে শুধুমাত্র যারা শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতায় মারা যায় তাদের মৃত্যু করোনার কারণে হয়েছে বলে গণনা করা হয়। একইসঙ্গে নতুন নিয়ম অনুযায়ী গণ পরীক্ষাও আর বাধ্যতামূলক নয়।

আর তাই চীনের করোনা পরিসংখ্যান দেশটির প্রকৃত পরিস্থিতিকে প্রতিফলিত করে না।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.