করোনাকালে অসামান্য অবদান মানবাধিকার পদক পেল জেএমআই গ্রুপ
নিজস্ব প্রতিবেকদ: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ করে করোনা মহামারিকালে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘মানবাধিকার পদক ও সম্মাননা’ পেয়েছে জেএমআই গ্রুপ।
বুধবার (১১ জানুয়ারি, ২০২৩) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ব্যুরো অব হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ (বিএইচআরবি) এ সম্মাননা প্রদান করে। দেশের ওষুধ ও চিকিৎসা-সরঞ্জাম উৎপাদন খাতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ ছাড়াও মানবাধিকার পদক ও সম্মাননা পেয়েছে আরও পাঁচ ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠান।
করোনা মহামারির শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে চীনে পাঠানো সুরক্ষাসামগ্রীতে ১৩ লাখ পিস গ্লোভস সরবরাহ, করোনা প্রতিরোধী গণ-টিকাদান কর্মসূচিতে একমাত্র দেশিয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অটো-ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জ সরবরাহ করা, দেশে প্রথমবারের মতো সূক্ষ্ম ভাইরাসপ্রতিরোধী ‘কেএন৯৫’ মাস্ক উৎপাদন, বিনামূল্যে গরিব ও অসহায় মানুষের মধ্যে খাবার ও সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণসহ স্বাস্থ্যসেবায় নানা অবদান রাখায় জেএমআই গ্রুপকে সম্মাননা দেওয়া হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাকের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি।
বিএইচআরবি পদক ও সম্মাননা পাওয়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো — স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, দৈনিক প্রথম আলো, বসুন্ধরা গ্রুপ, বেক্সিমকো ফার্মা, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, হোটেলস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. আমিনুর রহমান, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী এবং কণ্ঠশিল্পী ও সমাজকর্মী তাসরিফ খান —। বিএইচআরবি প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব মো. শাহজাহান বলেন, সম্মাননা দেওয়ার ক্ষেত্রে করোনাকালে তাদের কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে বিবেচিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেকেই মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছেন। তবে ব্যুরো অব হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশের চিন্তা ধারা একটু ভিন্ন। তাঁরা করোনাকালে যারা আর্তমানবতার সেবায় কাজ করেছেন, তাঁদের খুঁজে বের করে পদক ও সম্মাননা দিয়েছেন। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাঁরা পদক ও সম্মাননা দিলেন, তাঁরা সবাই দেশের আলোকিত এবং গুণী মানুষ। তাঁরা সবাই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।’
পুরস্কার গ্রহণের পর দেয়া বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্যখাতের অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতিশীল নাম জেএমআই। আমরা ১৯৯৯ সালে মাত্র ৫০ জন কর্মী নিয়ে তিন ধরণের পণ্য উৎপাদন দিয়ে ব্যবসা শুরু করি, সেখানে বর্তমানে মোট কর্মী সংখ্যা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়েছে। জেএমআই গ্রুপের অধীনে বর্তমানে ওষুধ ও চিকিত্সা সরঞ্জাম উৎপাদন, বিপণন, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, মুদ্রণ, শিল্পজাত গ্যাস, এলপিজি, এলপিজি সিলিন্ডার ও অটো ট্যাংক তৈরিসহ নানা খাতে মোট ৪২টি শিল্প-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ২৪ বছরের দীর্ঘ যাত্রায় জেএমআই গ্রুপের এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ পেরিয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক ও চীন থেকে এসেছে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) হিসেবে। বর্তমানে আমাদের বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় ৪০০ টিরও বেশি ধরণের চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং স্বাস্থ্যসেবা পণ্য উত্পাদন হচ্ছে, যার মধ্যে অন্তত ৫০ টিই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রস্তুতকৃত। আমাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকাসহ বিশ্বের ৪০ টিরও বেশি দেশে।’
তিনি আরও জানান, ‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে অবিচল থেকে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে যাচ্ছি আমরা। করোনাকালে আমাদের কোনো কারখানা একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেএমআই গ্রুপের কর্মীরা দেশের মানুষের জন্য ওষুধ ও অন্যান্য সুরক্ষাসামগ্রী প্রস্তুত করেছে। আজকে আমাকে এখানে সম্মানিত করায় আমি আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।