আজ: মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৩ জানুয়ারী ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

চীনে এক সপ্তাহে করোনায় ১৩ হাজার মানুষের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনে ব্যাপকভাবে বেড়েছে করোনার সংক্রমণ। মূলত জিরো কোভিড পলিসি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি। আর এর জেরেই চীনে এক সপ্তাহে প্রায় ১৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর সামনে এসেছে।

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ থেকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে চীনের হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১৩ হাজার কোভিড-সম্পর্কিত মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দেশটির জনসংখ্যার বিশাল অংশ ইতোমধ্যে ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন বলে চীনের একজন শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানানোর পর এই তথ্য সামনে এলো।

এর আগে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে চীন জানিয়েছিল, জিরো কোভিড নীতি বাতিলের পর গত এক মাসে চীনে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ করোনায় মারা গেছেন। বিতর্কিত কোভিড নীতি বাতিলের পর সেবারই প্রথম চীনের সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা করোনায় প্রাণহানির এই তথ্য প্রকাশ করে।

চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) গত শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, গত ১৩ থেকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬৮১ রোগী করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর শ্বাসকষ্টের কারণে মারা গেছেন এবং আরও ১১ হাজার ৯৭৭ জন এই সময়ের মধ্যে সংক্রমণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রোগে মারা গেছেন।

অবশ্য এই পরিসংখ্যানে বাড়িতে মারা যাওয়া কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক বৈজ্ঞানিক তথ্য ও পর্যালোচনা বিষয়ক সংস্থা এয়ারফিনিটি’র ধারণা, চন্দ্র নববর্ষের ছুটিতে চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দৈনিক প্রাণহানি প্রায় ৩৬ হাজার পর্যন্ত উঠতে পারে। সংস্থাটির অনুমান, গত ডিসেম্বরে চীন তার জিরো কোভিড পলিসি বাতিল করার পর থেকে এই রোগে ৬ লাখেরও বেশি লোক মারা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের কর্মকর্তা গুও ইয়ানহং এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, করোনার ঢেউয়ের সর্বোচ্চ সীমা চীন অতিক্রম করেছে। তবে রোববারের চন্দ্র নববর্ষ উপলক্ষে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কয়েক মিলিয়ন মানুষ দেশজুড়ে ভ্রমণ করছে। যা নতুন করে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত বুধবার দেশটির গ্রামীণ অঞ্চলে ভাইরাসের বিস্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চীনের প্রত্যন্ত এলাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসা সম্পদের অভাব রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।

উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও চীন শুরু থেকেই এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সামাজিক বিধি-নিষেধ আরোপ করে।

যা নিয়ে দেশটিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। করোনা বিধিবিরোধী বিক্ষোভের জেরে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বিতর্কিত জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেয়।

আর এরপরই থেকেই দেশটিতে ভাইরাসটির ব্যাপক প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আর এর জেরেই দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের উপচে পড়া ভিড় এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠান স্থলে লাশের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.