ক্রাউন সিমেন্টে’র বেড়েছে আয় কমেছে মুনাফা
শাহ আলম নূর : এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, ক্রাউন সিমেন্ট নামেও পরিচিত। অর্থবছরের প্রথমার্ধে রেকাম্পানির নেট মুনাফায় ১৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারে অস্থিরতা এবং সুদ পরিশোধের জন্য খরজ বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিমেন্ট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির লোকসান এমন সময়ে বেড়েছে যখন এর প্রথম অর্ধ বার্ষিকিতে আয় বেড়েছে ২৯ শতাংশ।
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ক্রাউন সিমেন্ট পিএলসির চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। তবে আয় বাড়লেও আর্থিক ব্যয়সহ বিভিন্ন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ। কোম্পানির সর্বশেষ প্রকাশিত চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে ক্রাউন সিমেন্টের মোট আয় হয়েছে ১ হাজার ১৩০ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৮৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ২৫৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বা ২৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১১ কোটি ৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে আয় বাড়ার পরও মুনাফা কমার ক্ষেত্রে কোম্পানিটির আর্থিক ব্যয় বৃদ্ধি বড় ভূমিকা রেখেছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির আর্থিক ব্যয় হয়েছে ৯৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ ব্যয় ছিল ২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭৫ পয়সা। সদ্যসমাপ্ত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৮৩ পয়সায়।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির মোট আয় হয়েছে ৬২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৪৭৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৯৯ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা হয়েছিল ২১ পয়সা।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ক্রাউন সিমেন্টের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৫ টাকা ৭৯ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৪৯ টাকা ১৮ পয়সায়। আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৫২ টাকা ৬৯ পয়সায়।
ক্রাউন সিমেন্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন “চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সরবরাহ শৃঙ্খলকে আরও ব্যাহত করেছে। এবং বিদ্যমান বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও শক্তির দাম বৃদ্ধির প্রমাণ।
তিনি বলেন এই যুদ্ধটি নির্মাণ শিল্পের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যদিও বেশিরভাগ নির্মাণ শিল্প বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে আগামী দিনে বেসরকারী এবং সরকারী উভয় ক্ষেত্রেই নির্মাণ কার্যক্রমে গতি পাবে। তিনি যোগ করেছেন।