ইক্যুইটি মাইনাসে জর্জরিত বিনিয়োগকারীরা
![](https://www.sharebazarnews.com/wp-content/uploads/2015/07/dse-cse.jpg)
শেয়ারবাজার রিপোর্ট: দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল হচ্ছে না পুঁজিবাজার। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর তলানিতে এসে ঠেকায় প্রায় সব বিনিয়োগকারীদের পোর্টফলিওর ইক্যুইটি মাইনাসে রয়েছে। হাতে নগদ টাকা সংকট থাকায় বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী পুন:বিনিয়োগে আসতে পারছেন না।
অন্যদিকে নতুন করে হাউজে টাকা জমা দিলে তা মাইনাস ইক্যুটির সঙ্গে সমন্বয় হয়ে যাবে। ফলে অন্য কোম্পানির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রেও বিনিয়োগকারীরা সুযোগ পাবেন না-এমন ধারণায় অনেকে হাউজে নতুন করে টাকা জমা দিচ্ছেন না। তবে কিছু কিছু সিকিউরিটিজ হাউজ পুন:বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্বল্প পরিমাণ (মোট জমাকৃত টাকার ২০-২৫ শতাংশ) মাইনাস ইক্যুইটির সঙ্গে সমন্বয় করে বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির শেয়ার কেনার সুযোগ প্রদান করছে।
তবে তা চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত নগন্য। তাই বর্তমান পুঁজিবাজারে মাইনাস ইক্যুটিতে জর্জরিত বিনিয়োগকারীদের তহবিল সুবিধা দেয়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু ধস পরবর্তী পুঁজিবাজারে যতো ধরণের তহবিল সুবিধা প্রদান করা হয়েছে তা কেবল কাগজে-কলমেই রয়েছে। এখনো কোনো আর্থিক সুবিধা বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয়নি। বাজার উন্নয়নে গঠিত বাংলাদেশ ফান্ড নিজের অস্তিত্ব রক্ষায় ব্যস্ত। অন্যদিকে বাজার স্থিতিশীলকরণ তহবিলের নামে বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। সর্বশেষ বর্তমানে প্রণোদনা প্যাকেজে বিশেষ স্কিমের আওতায় সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদানের নামে চলছে টালবাহানা। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া স্বত্ত্বেও বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী এ সুবিধা পাচ্ছেন না।
এদিকে যেসব বিনিয়োগকারীর ইক্যুইটিতে মাইনাস রয়েছে তাদের পুন:বিনিয়োগে মাইনাস সমন্বয় না করে পুরো অর্থ পুন:বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়া উচিত বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) একটি নির্দেশনা জারি করাই যথেষ্ট বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, নিজেদের পোর্টফলিওতে ইক্যুইটি মাইনাসের কারণে লেনদেন করতে পারছেন না অধিকাংশ বিনিয়োগকারী। নতুন করে নগদ টাকা হাউজে জমা দিলে তা ইক্যুইটি মাইনাসের সঙ্গে সমন্বয় হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বেশিরভাগ সিকিউরিটিজ হাউজে পুনরায় শেয়ার কেনার জন্য টাকার লিমিট বাড়িয়ে দিচ্ছে না। ফলে নতুন করে টাকা জমা দিয়েও লেনদেনে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। অন্যদিকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ইক্যুইটি মাইনাসের কারণে নতুন করে বিনিয়োগে আসছে না অনেক বিনিয়োগকারী।
এদিকে বর্তমানে পুঁজিবাজারে যে পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে তার ৯৫ শতাংশই করছে সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকাররা। কারণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী যে পরিমাণ লোকসানে রয়েছেন তাতে লেনদেন করার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। এছাড়া হাতে নগদ টাকা না থাকায় নতুন করে বিনিয়োগও তারা করতে পারছেন না। ফলে শেয়ারবাজারে দৈনিক লেনদেনের ৯৫ ভাগই নির্ভর করছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উপর।
বাজার বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের মতে, বর্তমানে অধিকাংশ মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার দর এতো নিচে যে বিনিয়োগ করলে লাভ নিশ্চিত। কিন্তু হাতে টাকা না থাকায় বিনিয়োগ করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। তবে বাজার ধারবাহিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লোকসানের পরিমাণ কমে যায়। এক্ষেত্রে তাদের কোনো তহবিল সুবিধারও প্রয়োজন পড়ে না। তাই ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে বাজার স্থিতিশীল করার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারা।
শেয়ারবাজারনিউজ/ম.সা