আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, শনিবার |

kidarkar

সরকারি চাকরিজীবীরা গাড়ি-বাড়ির চিন্তায় বিভোর: রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিজীবীরা কীভাবে গাড়ি-বাড়ির মালিক হওয়া যায় সে চিন্তায় বিভোর থাকেন। ভুলেই যান যে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং জনগণের সেবক। নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য অনেক সময় দেশ ও জাতির বড় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতেও পিছপা হন না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, খেলাপি ঋণের এক শতাংশের জন্যও সাধারণ মানুষ দায়ী নয়। বড় বড় ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিরাই বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে স্বেচ্ছায় খেলাপি হচ্ছেন। তারা ঋণ নেনই, না দেওয়ার জন্য। অবশ্য এর সঙ্গে একশ্রেণির ব্যাংকারেরও যোগসাজশ আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আরও বলেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সার্কভুক্ত একটি দেশের অর্থনীতির দেউলিয়াত্বে সে দেশের একজন মন্ত্রীর খবর অনেকের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অর্থনীতি দেউলিয়াপনার জন্য আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের চক্রকেই দায়ী করা হয়েছে। এ চক্রের অশুভ আঁতাত যেকোনো দেশের জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের শিক্ষায় দীক্ষিত হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এসব শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র।

কিন্তু দুঃখের বিষয় আজকাল রাজনীতিতে ক্ষমতা আর অর্থবিত্তের দাপটই নিয়ামক শক্তি হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। ছাত্ররাজনীতিতেও এসব অশুভ ছায়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। দখলবাজি আর চাঁদাবাজির কারণে ছাত্ররাজনীতিকে এখন আর মানুষ আগের মতো সম্মানের চোখে দেখে না। বরং নেতিবাচক দেখে। এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শুখকর নয়, যোগ করেন আবদুল হামিদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব আইনের দ্বারা পরিচালিত হয়। কিন্তু বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অপব্যবহার করে একটা নিজের সুযোগ সুবিধা এবং আখের গোছাতে তারা বেশি ব্যস্ত থাকে। ক্ষমতা ধরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রদের ব্যবহার করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। পত্রপত্রিকা খুললেই দেখা যায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজির নেতিবাচক খবর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপাচার্য ও শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতার খবরই বড় করে ছাপা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা অনেক ঊর্ধ্বে। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তির অপকর্ম ও অদক্ষতা গোটা শিক্ষক সমাজের মর্যাদাকে ম্লান করছে। এছাড়া ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এর আগে বিকেল ৩টায় রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা সমাবর্তনস্থলে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও প্রভাষক এবং সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যরা অংশ নেন। এবারের সমাবর্তনে মোট ১৫ হাজার ২২৩ জন গ্র্যাজুয়েট অংশ নিয়েছেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.