আজ: মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪ইং, ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

বড় দরপতনে লেনদেন ২৫০ কোটি টাকার নিচে

পুঁজিবাজারে লেনদেন তলানিতে, রাস্তায় বিনিয়োগকারি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন নেমে এসেছে তলানিতে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছে বিনিয়োগকারি। গতকাল পুঁজিবাজারে বড় দরপতনে লেনদেন ২৫০ কোটি টাকার নিচে।
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দেশের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ দরপতনের প্রতিবাদে মতিঝিলের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা এক ঘণ্টার বেশি সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান।
শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর পর দরপতন দেখা দিলে গতকাল দুপুর পৌনে ১টার দিকে ব্রোকারেজ হাউজ ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন বিনিয়োগকারীরা।
মতিঝিলে অবস্থিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিনিয়োগকারীরা। সেখানে লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেন তারা।
‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’র ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মতিঝিলের রাস্তায় শান্তিপূর্ণ অবস্থান শেষে বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধি দল ১২ দফা দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে রওয়ানা হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘শেয়ারবাজারে যেভাবে দরপতন হচ্ছে তাতে প্রতিদিন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছেন। বিনিয়োগ করা পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি। আমরা ডিএসইর আগের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে এক ঘণ্টার বেশি সময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। অবস্থান কর্মসূচি পালন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে যাচ্ছি।’
শেয়ারবাজারে ২০১০ সালে মহাধস নামলে বিনিয়োগকারীরা নিয়মিত রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতেন। এমনকি ২০১৯-২০ সালেও রাস্তায় নেমে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
দিনের পর দিন বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করায় ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট ডিএসইর পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
ডিএসইর পক্ষ থেকে এ সাধারণ ডায়েরি করা হলে বন্ধ হয়ে যায় বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ। এর মধ্যেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যানসহ কমিশনার নিয়োগ দেয় সরকার।
নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। ফলে বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ ও রাস্তায় নামর বিষয়টি অনেকটাই ভুলে যায়। কিন্তু কয়েক মাস ধরে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ দরপতন চলছে।
গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এতে সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে কমে বাজার মূলধন। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৬২ হাজার ২২৬ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ১ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা।
এদিকে  বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায় টানা দরপতন আর লেনদেন খরার বৃত্তে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। এ পতনের বাজারে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে লেনদেন হয়েছে ২৫০ কোটি টাকার কম।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বড় দরপতন হয়েছে। বাজারটিতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেয়ারবাজারে বড় দরপতনের আভাস পাওয়া যায়। লেনদেন শুরু হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকে। ফলে লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৭ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্র।
দিনের লেনদেন শেষে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির। আর ১৩১টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পারা চার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- আলহাজ্ব টেক্সটাইল, বাটা সু, প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স এবং রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৮২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য লেনদেন ২৫০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২২২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
লেনদেন খরার বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ১৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ওরিয়ন ফার্মা, আমরা নেটওয়ার্ক, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেমিনি সি ফুড এবং ইস্টার্ন হাউজিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির এবং ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ১ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ডিএসইএক্স কমে ৪১ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট।
এছাড়া বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমে ২ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমে ১০ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট। সেই প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমে ১৪৯ কোটি ১১ লাখ টাকা।

৯ উত্তর “পুঁজিবাজারে লেনদেন তলানিতে, রাস্তায় বিনিয়োগকারি”

  • MD.Delower hossain says:

    পুঁজিবাজারের এই অবস্থার জন্য বিএসসি দায়।
    কেননা কিছুদিন আগে বলল ফ্লোর প্রাইজ তুলবে না
    তারপর হঠাৎ করে 168 টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইজ তুলে ফেলল। কিছু কোম্পানি ৪০% পর্যন্ত পড়ে গেছে উনারা কি চোখে দেখেন না ????
    বিএসসির উচিত ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস উঠবে না এরকম ঘোষণা দেয়া উচিত।
    আর ১৬৮ টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছে তাদের দাম পূর্বের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হোক।

  • MD.Delower hossain says:

    এজন্য বিএসসি দায়ী।

  • শেখর চন্দ্র বেপারী। says:

    পুজিবাজারে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়ে গেছি।সারাজীবনের কষ্টের টাকা আমার।এখন মৃত্যু ছাড়া কোনো গতি দেখছি না।১% লেস দিয়ে যে সব শেয়ারের ফ্লোর প্রাইচ তুলে নেয়া হয়েছে প্রতিনিয়ত তা কমতিছে।।বিক্রি করতে গেলে বাইয়ার নেই।তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আপনি আমাদের বাঁচান। এভাবে চলতে থাকলে ছেলে মেয়ে নিয়ে পথে ভিখ্খা করতে হবে।আপনি কি তাই চান আমাদের সাধারণ বিনিয়োগ কারির জন্য।?ধন্যবাদ সবাইকে।

  • Anonymous says:

    একটা গ্রুপ এই বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যাদের হাতে এই বাজার তারা চায় সাধারন বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে যাক। একমাত্রে আল্লাহ ছাড়া এই অসহায় ক্ষুত্র বিনিয়োগ কারীদের সাহায্য করার মত কেউ নাই। আল্লাহ যেন এই গ্রুপ এর লোকদেরকে হেদায়েত দান করেন। আমিন

  • মোঃ সাহাব উদ্দিন মোল্লা দল says:

    ,,, বর্তমান শেয়ার বাজার যে অবস্থায় আছে ফোলর পাইস যদি উঠিয়ে নিয়ে যায় সাধারণ বিনিয়োগকারী অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে

  • MD.Delower hossain says:

    বিএসসি এজন্য দায়ী সকালে বলল তুলবে না বিকেলে ১৬৮ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে ফেলল।
    এক পারসেন্ট করে পড়তে পড়তে ৪০% এর উপরে পড়ে গেছে তারপরেও তারা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
    তা তো বলে দিতে পারে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফ্লোর প্লাইজ উঠবে না তাহলে হয়তো ইনশাআল্লাহ কারীরা কিছু আশ্বাস পাবে।

  • মো:জাকির হোসেন নাদিম says:

    অব‍্যশই আবারো ১৬৮ কোম্পীনিকে ফ্লোর প্রাইজ বেদে দেওয়া হোক, এবং শেয়ার বাজার যতদিন ঠিক না হয়,তথদিন যাবদ ফ্লোর প্রাইজ বহাল থাকুক,নয় কোন চালবাজী নয় কোন বাটপারি, আগে সাধারন বিনিয়োগকারি সুরক্ষা করুন,

  • MD.Delower hossain says:

    সূচক কমলেও কমে বাড়ার সময়ও কমে।

    শেয়ারের মূল্য ৪০% কমে বাড়ার সময় এক পারসেন্টও বাড়ে না, এটা দেখার কি কেউ নেই?????

  • এস এম আবু বকর says:

    বিসেকের কারনে পুজিবাজারের এই করুন পরিনতি ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.