আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১২ মার্চ ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : ইতিহাসগড়া জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। হাতে ছিল ৪ উইকেট। এমন সমীকরণের সামনে ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন ক্রিস জর্ডান। এই পেসারের প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে সমীকরণ সহজ করেন শান্ত। এরপর একই ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পরপর চার মেরে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন তাসকিন। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। সব ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

রোববার (১২ মার্চ) মিরপুর শের-ই বাংলায় সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অবশ্য শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। সিরিজজুড়ে ব্যর্থ লিটন আজও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন তিনি। কিছুতেই যেন খোলস ছেড়ে বের হতে পারছেন না এই ওপেনার।

লিটনের বিদায়ের পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আট বছর পর চলতি সিরিজ দিয়ে দলে ফেরা রনি তালুকদার। উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় গড়তে পারেননি টাইগার এ ব্যাটার। জোফরা আর্চারের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে নামের পাশে যোগ করেছেন ১৪ বলে ৯ রান।

২৭ রানের মধ্যেই দুই ওপেনার ফিরলে বাংলাদেশের আকাশে শঙ্কার কালো মেঘ জমে। তবে শান্ত-হৃদয় জুটিতে সেই শঙ্কার মেঘ উড়ে গেছে। দুই তরুণের সাবলীল ব্যাটিংয়ে দশম ওভারে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ। তবে এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারেননি হৃদয়।

ইনিংসের ১১তম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আসেন রেহান আহমেদ। অভিষিক্ত এই স্পিনার নিজের দ্বিতীয় বলেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন। তার করা শট এবং ওয়াইড ডেলিভারীতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৭ রান।

এরপর মিরাজ এবং শান্তর ৪১ রানের জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। তবে ২০ রান করে মিরাজ সাজঘরে ফিরলে আবারও ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। এরপর সাকিব-আফিফ দ্রুত ফিরলে চেপে ধরে ইংলিশরা। তবে এদিন এক পাশ আগলে রেখে ব্যাটিং করেছেন শান্ত।

এই টপ অর্ডার ব্যাটারের অপরাজিত ৪৬ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

এর আগে সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বেশ ধুঁকেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। যদিও ভালোই শুরু করেছিলেন দুই ইংলিশ ওপেনার ডেভিড মালান এবং ফিল সল্ট। তবে তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান তাসকিন আহমেদ। দলীয় ১৬ রানে ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন এই পেসার। সাজঘরে ফেরার আগে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ৫ রান।

শুরুতে মালানকে হারালেও খুব বেশি চাপে নেয়নি ইংল্যান্ড। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন ফিল সল্ট। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন মঈন আলি। তবে আক্রমণে এসেই ফিল সল্টকে ফেরান সাকিব আল হাসান। সল্টকে সরে যেতে দেখে অফ স্টাম্পের ওপর বল রেখেছিলেন সাকিব। সে বলে টার্নের সঙ্গে ছিল বাউন্স। গতি বৈচিত্র্যে ডানহাতি ব্যাটারকে পরীক্ষায় ফেলছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন সল্ট। ১৯ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় তার নামের পাশে তখন ২৫ রান।

ধারাবাহিকভাবে ওপেনিংয়ে খেলা জস বাটলার আজ খেলতে নেমেছিলেন চারে। তবে ব্যাটিং অর্ডার বদলে সুফল পেলেন না তিনি। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হাসান মাহমুদের ইয়র্কারে কাটা পড়লেন। আগের ম্যাচে ক্যাচ আউট হলেও এবার আর নিজের স্টাম্প রক্ষা করতে পারলেন না তিনি। হাসানের স্বপ্নের মতো ডেলিভারির কোনো জবাব ছিল না ইংলিশ অধিনায়কের কাছে। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬ বলে ৪ রান।

সল্ট ও বাটলারের বিদায়ের পর দলের হাল ধরার দায়িত্বে ছিলেন মঈন আলি। তিনি সেটা মেটাতে গেলেন পাল্টা আক্রমণে। কিন্তু তাতে দলের বিপদ আরও বাড়িয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। মিরাজের বলে সুইপ করে ছক্কার চেষ্টায় ধরা পড়েন ডিপ মিডউইকেটে। একটি করে ছক্কা ও চারে মঈন করেন ১৭ বলে ১৫ রান।

৫৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে স্যাম কারান এবং বেন ডাকেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল ইংল্যান্ড। তবে উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না কারান। ১৬ বল খেললেও ১২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। এই তরুণ ব্যাটারকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন মিরাজ।

একই ওভারে রান আউটের শিকার হয়েছেন ক্রিস ওকস। মিরাজের করা ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে প্রান্ত বদল করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তার আগে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। আর তাতে তিন অঙ্ক ছুতেই সাত উইকেট হারায় ইংলিশরা।

এরপর নিচের সারির ব্যাটাররাও সুবিধা করতে পারেননি। যারফলে বেশি দূর এগোয়নি তাদের ইনিংস। শেষদিকে অভিষিক্ত রেহান আহমেদের ব্যাট থেকে ১১ রান আসলে ২০ ওভার শেষে ১১৭ রান তুলে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ইনিংসে ১২ রান খরচ করে ৪ উইকেট শিকার করেছেন মিরাজ। যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.