আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার |

kidarkar

জাতিসংঘে ইউক্রেন ইস্যুতে ভোটদানে বিরত বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেন ইস্যুতে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ। ওই একই প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারতও। ইউক্রেনে কথিত যুদ্ধাপরাধের তদন্তের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য এই মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) এই ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়।

অবশ্য বাংলাদেশ-ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ ভোটদান থেকে বিরত থাকলেও প্রস্তাবটি পাস হয়েছে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে বুধবার (৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনে কথিত যুদ্ধাপরাধের তদন্তের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) প্রস্তাবে এদিন ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে বাংলাদেশ, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

এনডিটিভি বলছে, এরপরও ভোটাভুটিতে জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবটি পাস হয়। ভোটাভুটিতে ২৮টি দেশ খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানসহ ১৭টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল। আর মাত্র দু’টি দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এই দু’টি দেশ হচ্ছে চীন ও ইরিত্রিয়া।

ভোটাভুটির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইউক্রেনের স্থায়ী প্রতিনিধি সের্গি কিসলিৎসিয়া টুইট করে ধন্যবাদ জানান। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে উদ্ভূত ইউক্রেনে মানবাধিকার পরিস্থিতির সমর্থনে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের আমরা অভিবাদন জানাই। মাত্র দু’টি দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিল। এবার যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতা হবে!’

অবশ্য এর আগেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে বিভিন্ন সময় ভোটদান থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ-ভারত। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোটাভুটির মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘বিস্তৃত, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠা এবং ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত করে।

ওই প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের সনদ মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। সেসময় ১৪১ টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

তবে ভোটদান থেকে বিরত থাকার কারণ হিসেবে সেসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় টেকসই ও বাস্তবসম্মত পথরেখা না থাকায় ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।

এছাড়া একই কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেসময় জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ বলেছিলেন, ভারত সংলাপ ও কূটনীতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বহুপাক্ষিকতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অন্যদিকে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের শুরু থেকে চীনা নানা সময়ই জাতিসংঘে বিভিন্ন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। মঙ্গলবারের ভোটাভুটিতেও তারা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়।

মূলত গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল।

উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনও সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.