আবেদনের ৭২ ঘন্টার মধ্যেই জামানতবিহীন ঋণ
নিজস্ব প্রতিবেদক: অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাই ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে লোন নিয়ে তাদের ব্যবসাটাকে আরও বড় করতে চান। কিন্তু লোন নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। আবার বন্ধক রাখার মতো কোনো সম্পদ না থাকায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেও তারা কোনো ধরনের লোন পান না। ফলে তাদের ব্যবসাটাকে আর বড় করা হয়ে ওঠে না।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এই সমস্যার সমাধান করতেই ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশে প্রথম চালু করেছে ‘দ্রুতি’ নামে একটি ট্যালি লোন পদ্ধতি। এটি মূলত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক লোন দিয়ে সাহায্য করার জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের একটি অভিনব উদ্যোগ।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনের হিসেবের জন্য ব্যবহার করেন ট্যালি খাতা। আর বাংলাদেশে এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রচলিত এই ট্যালি খাতার উপর ভিত্তি করেই ব্র্যাক ব্যাংক শুরু করে ট্যালি লোন। ব্র্যাক ব্রাংকের ট্যালি লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা লেনদেন এবং ঋণযোগ্যতার প্রমাণ হিসেবে তাদের এই ট্যালি খাতা ব্যবহার করতে পারেন। ব্র্যাক ব্যাংকের রিলেশনশিপ অফিসাররা ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলো পরিদর্শনের পর ব্যবসায়ীদের ট্যালি খাতার রেকর্ড অনুযায়ী তাদের প্রয়োজন ও চাহিদাগুলো মূল্যায়ন করেন এবং ঋণের আবেদনগুলো গ্রহণ করেন।
এছাড়াও ব্যাংক গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ঋণের আবেদনের জন্য ট্রেড লাইসেন্স পেতে সাহায্য করে। আর ট্যালি লোন ‘দ্রুতি’র আওতায় ন্যূনতম দুই বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পুরুষ উদ্যোক্তা এবং এক বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নারী উদ্যোক্তা কোনো ধরনের বন্ধক ছাড়াই সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন। এই ঋণ দুই বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য।
ব্র্যাক ব্যাংকের এই উদ্যোগটি ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ নারায়ণগঞ্জেও চালু করা হয়েছে। এছাড়াও পরবর্তীতে কুমিল্লা ও নরসিংদী অঞ্চলেও এই ট্যালি লোন ‘দ্রুতি’ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই ঋণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মানসিক বাধা অতিক্রম করতে এবং অর্থায়নে সহায়তা করে ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে। ফলে ঋণ চক্র থেকে মুক্ত হয়ে ব্যবসায়ীয়া স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা করতে পারছেন এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, ব্র্যাক ব্যাংকের ট্যালি লোন ‘দ্রুতি’র কারণে আর্থিক লেনদেনের প্রতি ব্যবসায়ীদের যে আস্থা তা ব্যাংকিংকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ন্যায্য ও সমান সুযোগ তৈরি করছে। ঋণ অনুমোদনের এই প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ট্যালি খাতার রেকর্ডের মূল্যায়ন করা হয় এবং ৭২ ঘন্টার মধ্যেই ঋণ প্রদান করা হয়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশে থাকতে ব্র্যাক ব্যাংক আগামীতে আরও নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসবে।