আজ: রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ইং, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার |

kidarkar

পুঁজিবাজারে দ্বৈত কর পরিহারে এনবিআরকে বিএসইসির চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজার থেকে দ্বৈত কর নেওয়া পরিহার করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বুধবার (৬ এপ্রিল) এক চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে এ অনুরোধ জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয় করা মুনাফা থেকে দুবার উৎসে কর আদায় করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একবার কোম্পানির কাছ থেকে উৎসে কর নিচ্ছে এনবিআর, আরেকবার তা নিচ্ছে বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এমন ‘দ্বৈত কর’ পরিহার করতে অনুরোধ করে বিএসইসি।

এবিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের স্বার্থে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে মাথায় রেখে তিনি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে তিনটি সুপারিশ করেছেন। এনবিআর চেয়ারম্যান তা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবেন বলে তিনি আশা করছেন।

বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, নিবাসী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং অনিবাসী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ উৎসে কর আদায় করছে এনবিআর। এ তথ্য উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, কোম্পানি বা বন্ড ইস্যুয়ার কোম্পানি তার মুনাফার ওপর কর দিয়ে আসছে। লভ্যাংশ বা আয় দেওয়ার সময় আবার কর কর্তন করা হচ্ছে। এতে দ্বৈত কর আদায় করা হচ্ছে। এভাবে উৎসে কর পরিহার করা হলে অধিকতর লভ্যাংশ বণ্টন করার সুযোগ সৃষ্টি হবে কোম্পানির জন্য।

শুধু তাই নয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তৃতীয় ধাপেও কর আরোপ করা হচ্ছে বলে এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, কর কাঠামো এক স্তরের হলে কর আদায়ের প্রক্রিয়া সহজতর হবে।

চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হচ্ছে পুঁজিবাজার। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সার্বিক অর্থে ইক্যুইটিনির্ভর (মূলধন)। পুঁজিবাজারে বৈচিত্র্য আনতে বিএসইসি কাজ করে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার উন্নত হলে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংকনির্ভরতা কমবে। বিষয়টি কাঙ্ক্ষিত শিল্পায়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। পুঁজিবাজার তথা বন্ড বাজারের উন্নয়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ২০২০-৩০–এর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।

শুধু দ্বৈত কর পরিহার নয়, মিউচুয়াল ফান্ডের আয় থেকে করমুক্ত সুবিধা বাড়ানো এবং তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান বৃদ্ধি নিয়েও নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে অর্জিত আয় ৫০ হাজার টাকা ও বেমেয়াদি মিউচুয়াল থেকে অর্জিত আয় ২৫ হাজার টাকা করমুক্ত রয়েছে। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম তাঁর চিঠিতে উভয় মিউচুয়াল ফান্ড থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কে করমুক্ত হিসেবে বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান চিঠিতে আরও বলেছেন, পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনে উৎসাহিত করতে দেশি, বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানিকে কর–সুবিধা দেওয়া দরকার। কর–সুবিধা দিলে তা তাদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা ধরনের খরচ বহন করতে হয় তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে। ফলে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহারের ব্যবধান থাকা উচিত অন্তত ১০ শতাংশ।

বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে ২০ শতাংশ এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ কর দিতে হয়। করহারের ব্যবধান ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.