আজ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

নতুন ও বিদেশী বিনিয়োগ আনতে কাজ করবে ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেড

সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে আরও ৫৮টি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক)। ইতোমধ্যে কয়েটি প্রতিষ্ঠান তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে।
নতুন ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) লাইসেন্স পাওয়া অন্যতম প্রতিষ্ঠান ট্রাস্ট রিজিওনাল ইকুইটি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তানিয়া শারমিন কথা বলেছেন দেশের অন্যতম নিউজ পোর্টাল শেয়ার বাজার নিউজের সাথে। তার কথার চুম্বক অংশটুকু তুলে ধরেছেন শেয়ার বাজার নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার শাহ আলম নূর।

বড় হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। দেশি-বিদেশি বড় বড় বিনিয়োগকারী বাজারে নতুন তহবিল নিয়ে আসছে। সরকারের বিভিন্ন পলিসি পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরিয়ে আনছে।
অপরদিকে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোয় সুশাসন ফিরে আসতে শুরু করেছে।
বিভিন্ন কোম্পানির ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও বিদেশ থেকে যাতে সহজে বিনিয়োগকারীরা লেনদেন করতে পারেন, তার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ব্রোকার হাউজের শাখা অফিস খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনা। এজন্য নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। এরই অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের কয়েকটি দেশের পুঁজিবাজারের সম্ভাবনা তুলে ধরতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজন করছে রোডশো। তবে এসব রোডশো থেকে খুব বেশি সাড়া পাওয়া না গেলেও ভবিষ্যত সম্পর্কে অনেক আশা দেখাচ্ছে।
ট্রাস্ট রিজিওনাল ইকুইটি লিমিটেড’র প্রধান লক্ষ্য হলো নতুন বিনিয়োগারী বাজারে নিয়ে আসা। অন্যদিকে বিদেশে বিনিয়োগ টানতেও কাজ করবে নতুন লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা তানিয়া শারমিন বলেন, দর্ঘ্যি সময় পর ব্রোকারেজ হাউজ পরিচালনার জন্য ৫৮টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে বিএসইসি। দেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়াতে এই সাহসী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি খুব সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নের্তৃত্বে কমিশন। সার্বিক সহযোগিতকার জন্য কাজ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। প্রতিষ্ঠানটির সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা খুব সুন্দরভাবে কাজগুলো বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, বিএসইসির চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ট্রেকের অনুমোদন। তিনি যে সব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তা বেশ ভালোভাবেই পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজে আসছে।
তানিয়া শারমিন বলেন, যেসব কোম্পানিকে ব্রোকারেজ হাউজ পরিচালনার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে স্টক ব্রোকার, সিডিবিএলের অনুমতি পেয়েছে। এবং তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) অনুমতির জন্য এখন অপেক্ষা অনেক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে অনেকগুলো ব্রোকারেজ হাউজ সারা দেশে পরিচালিত হচ্ছে। এদের সাথে পাল্লা দিয়ে নতুন বোকারেজ হাউজগুলো কিভাবে ব্যবসা করবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন বিনিয়োগকারী পাওয়া আসলেই একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের এর জন্য বিনিয়োগকারী পেতে মোটেও কষ্ট হবে না। কারণ এই প্রতিষ্ঠানে যারা বিও একাউন্ট খুলবে তাদেরকে কোন অর্থ ব্যয় করতে হবে না। অর্থাৎ সব ধরনের খরচ বহন করবে ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের। এখানে কোন হিডেন চার্জও দিতে হবে না। আসলে এই খরচ তাদের প্রতিষ্ঠান ভর্তুকি হিসেবে দিবে বলে তিনি জানান। বিও হিসাব খোলা সব সময়ের জন্য ফ্রি।
তিনি বলেন, ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের কম্পালায়েন্সের ব্যাপারে কোন কম্প্রোমাইজ করতে চায় না। তাদের প্রতিষ্ঠান কম্পালায়েন্সের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। বিএসইসি, ডিএসই ও সিডিবিএল এর সকল নিয়ম কানুন শতভাগ বাস্তবায়ন করতে বদ্ধপরিকর। বিও একাউন্ট থেকে শুরু করে সকল লেনদেনে তারা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগগুলোর নিয়মকানুন বাস্তবায়ন করবে বলে তিনি জানান।
ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা বলেন বিদেশী বিনিয়োগ আনার জন্য তারা বেশি গুরত্ব দিয়ে থাকবেন। কারণ দেশে এখন যেসব বিনিয়োগকারী রয়েছে তারা সবাই কোন না কোন ব্রোকারেজের সাথে ব্যবসা করছেন। এসব বিনিয়োগকারী নিয়ে আসা একটু কঠিন। কিন্তু বিদেশী বিনিযোগকারী যারা এখনও দেশে কোন ব্রোকারেজ হাউজের সাথে ব্যবসা শুরু করেনি তাদের নিয়ে আসা অনেকটাই সহজ হবে।
তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে প্রচুর পরিমানে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে। কারণ মার্কেট বড় হচ্ছে। নতুন নতুন অনেক পণ্য বাজারে আসছে। ফলে বিনিয়োগের জায়গ বাড়ছে। এতে দেশী-বিদশী বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট হচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগকারী নিয়ে আসার যে সুযোগ তৈরী হয়েছে ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের তা কাজে লাগাতে চায়।
দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে গবেষণা হচ্ছে না। বাজার বড় হওয়ার সাথে সাথে যে পরিমান গবেষণা হওয়া দরকার তার পরিমান অত্যন্ত নগন্য। অর্থাৎ দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে গবেষনা নেই বল্লেই চলে। এজন্য ট্রাস্ট রিজিওনাল ইক্যুইটি লিমিটেডের দেশের পুঁজিবাজার নিয়ে ব্যাপকভাবে গবেষণা করতে চায়। এজন্য ইতোমধ্যে একটি রিচার্জ টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমের সদস্যরা তাদের কাজও শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে গবেষণা ছাড়া ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবসা করা অত্যান্ত কঠিন হবে। কারণ যে প্রতিষ্ঠানে গবেষণা নেই সেখানে বিনিয়োগকারীরা যেতে আগ্রহ প্রকাশ করবে না। যে হাউজের গবেষণা যত বেশি হবে সেখানে বিনিয়োগকারী ততো বেশি যায়।
তিনি আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউজের জন্য কঠিন সময় আসছে। কারণ নীতি নির্ধারনী প্রতিষ্ঠানগুলো কম্পালায়েন্স বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক কঠিন হচ্ছে। কারণ এখন পর্যন্ত যে সব ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগকারীদের নিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার অধিকাংশই ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্রোকারেজ হাউজ।
তিনি বলেন, এখানে অনেক নতুন বিনিয়োগকারী আছেন,তাদের উচিত হবে প্রথম দিকে মার্জিন লোন ব্যবহার না করা। শেয়ার বাজার না বুঝে মার্জিন ঋণ ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পুঁজিবাজার সম্পর্কে জেনে বুঝে মার্জিন ঋণ ব্যবহার করা উচিত।
তানিয়া শারমিন বলেন,বিনিয়োগকারীদের উচিত হবে নিজের কাছে যে টাকা রয়েছে তা দিয়ে ব্যবসা করা। অনেকের কাছে অলস টাকা পড়ে রয়েছে যা তারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন। তবে ঋণ করে পুঁচিবাজারে বিনিয়োগ করা একেবারেই ঠিক নয়।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.