আজ: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

বাবরের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে পাকিস্তান জিতল অনায়াসেই

স্পোর্টস ডেস্ক : আগে ব্যাট করলেও এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যেন পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডের রান তাড়ায় খেলছে। তবে ঠিক তেমনটি নয়, সেই উত্তেজনা মূলত অধিনায়ক বাবর আজমের জন্য। ইনিংসের মাত্র ২ বল বাকি থাকলেও তার সেঞ্চুরি পেতে আরও ৭ রান প্রয়োজন ছিল। কিউই অলরাউন্ডার অফ স্টাম্পের বাইরে বলটি ফেলতেই বাবর কাভারের ওপর দিয়ে সেটি সীমানাছাড়া করেন। এরপরই বিশ্বরেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি উদযাপনে তার শূন্যে লাফ। সেই কীর্তি গড়তে দুটি বলেই বাবর বাউন্ডারি খেলেছেন।

এতদিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে দুটি সেঞ্চুরির রেকর্ড ছিল বাবর, ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং সুইজারল্যান্ডের ফাহিম নাজিরের। এবার দুজনকেই ছাড়িয়ে গেলেন পাকিস্তানি কাপ্তান। এই প্রথম কোনো অধিনায়ক হিসেবে বাবর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এছাড়া স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েছেন বাবর। ৯ সেঞ্চুরি নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাবরের সামনে আছেন ক্রিস গেইল (২২ সেঞ্চুরি)।

এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অল্প রানে গুটিয়ে বড় ব্যবধানে হেরে যায় সফরকারী নিউজিল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় ম্যাচটি পাকিস্তান জিতলেও আগের মতো একই ব্যবধান ছিল না। আবার বাবরের ব্যাটের সময় যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তার ছিটেফোঁটাও ছিল না কিউইদের ব্যাটিংয়ের সময়। ফলে স্বাগতিকরা টানা দ্বিতীয় ম্যাচে অনায়াসে জয় তুলে নিয়েছে। তবে বাবার ছাড়াও এতে বড় ভূমিকা ছিল হারিস রউফের। এর আগের জয়ে ৪ উইকেট নিয়ে তিনি ম্যাচসেরা হয়েছিলেন।

লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর। আগের ম্যাচে ব্যর্থ দুই ডানহাতি ব্যাটার এবার ৯৯ রানের জুটি গড়েন। মাত্র ৩২ বলে ফিফটি তুলে নিয়েই ফেরেন রিজওয়ান।

এতে অগ্রণী ছিলেন কিপার-ব্যাটসম্যান রিজওয়ান। ৩২ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে শুরুর জুটির রান, সেখানে তার অবদান ছিল ২৭। একই ছন্দে এগিয়ে গিয়ে ৩২ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। ৬টি চার ও ১ ছক্কায় তিনি করেন ৫০ রান। এমন শুরুর পর অনায়াসেই বাবরা দু’শ ফেরোনোর কথা ছিল। কিন্তু মাঝপথে ব্যাটিংয়ে সামলাতে হয় তাদের। প্রথম ম্যাচে সমান ৪৭ করে রান পাওয়া ফখর জামান ও সাইম আইয়ুব এই ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান। এছাড়া ২ রান করে কট বিহাইন্ড হন ইমাদ ওয়াসিমও। ফলে মাত্র ৬ রান তুলতেই ৪ ব্যাটারকে হারায় স্বাগতিকরা।

এরপর অবশ্য আর উইকেট পড়েনি। রেকর্ডের পথে ব্যাট করতে থাকা বাবরকে সঙ্গ দিয়েছেন ইফতিখার আহমেদ। ৩৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বাবর বাড়ান রানের গতি। ১৯তম ওভার শেষে বাবরের রান ছিল ৮৪। প্রথম বলে তিনি সিঙ্গেল নিলে মনে হচ্ছিল, সেঞ্চুরির সুযোগ বুঝি শেষ। কিন্তু পরের বলেই ইফতিখার প্রান্ত বদল করলে স্ট্রাইক পান পাকিস্তান অধিনায়ক। দারুণ এক শটে জেমস নিশামকে ছক্কা মেরে পৌঁছান নব্বইয়ের ঘরে। শেষ দুই বলে বাউন্ডারি মেরে ম্যাজিক ফিগার পূর্ণ করেন বাবর। অন্যদিকে মাত্র ১৯ বলে ইফতিখার ৩৩ রান করেন। এই দুজনের জুটিতে ৪৩ বলে আসে ৮৭ রান।

পাকিস্তানের দেওয়া ১৯৩ রানের লক্ষ্যে নামা কিউইরা একবারও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি। দুই ওপেনার টম ল্যাথাম ও চ্যাড বাওয়েস টিকে ছিলেন অনেকটা সময়। কিন্তু রানের গতিতে দম দিতে পারেননি কেউই। ল্যাথাম ১৯ রান করতে খেলেন ২০ বল, বাওয়েস ২৬ রান করেন ২৪ বলে। তাদের বিদায়ের পর সফরকারীদের নাড়িয়ে দেন রউফ। দুই অঙ্কে যেতে দেননি উইল ইয়াং, ড্যারিল মিচেল, জেমস নিশাম ও রাচিন রবীন্দ্রকে।

অন্য প্রান্তে নিয়মিত সঙ্গী হারালেও নিজের মতো করে শট খেলে যান চাপম্যান। ৩০ বলে তিনি পঞ্চাশ স্পর্শ করেন। আগের ম্যাচেও একমাত্র উল্লেখযোগ্য রান সংগ্রাহক চাপম্যানকে কেউই সঙ্গ দিতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের ইনিংস থামে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪-তে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন রউফ। এছাড়া পাকিস্তানের হয়ে শাদাব খান, জামান খান ও ইমাদ ওয়াসিম একটি করে উইকেট নেন। আজ (১৬ এপ্রিল) সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল। ইতোমধ্যে বাবর দল ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.