যাত্রী চাপ বেড়েছে কমলাপুরে, সময়মতো ছাড়ছে ট্রেন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে সোমবার (১৭ এপ্রিল)। প্রথম দুদিন (সোম ও মঙ্গলবার) যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা না গেলেও আজ বুধবার যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ভোর থেকেই যাত্রীর চাপ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। এখন পর্যন্ত শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেনি।
টিকিট দেখিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করতে দেখা যায় যাত্রীদের। সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ঘরেফেরা যাত্রীরা।
কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক যাত্রী তাদের টিকিট দেখিয়ে প্রবেশ করছেন। টিকিট থাকা সাপেক্ষে স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি মিলছে। আর যারা অনলাইন মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি তারা ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে কাউন্টার থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট সংগ্রহ করছেন। যদিও স্ট্যান্ডিং টিকিট নির্দিষ্ট হওয়ায় অনেকেই সংগ্রহ করতে পারছেন না।
একটি বাদে সব ট্রেনই নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মোট ১০টি ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে। এর মধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৩৫ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। এ ট্রেনটি সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ৮টা ৫০ মিনিটে স্টেশন ছাড়ে।
অনলাইন মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারেননি তাদের জন্য যাত্রার দুই ঘণ্টা আগে দাঁড়ানো (স্ট্যান্ডিং টিকিট) টিকিটের ব্যবস্থা রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। স্ট্যান্ডিং টিকিট পেতে ভোর থেকেই বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা কাউন্টারগুলোর সামনে ভিড় জমান। তবে ২৫ শতাংশ টিকিটের বেশি বিক্রি করা হচ্ছে না। এতে অনেকেই টিকিট কাটতে না পেরে স্টেশন ত্যাগ করছেন।
তাসনিন তানিশা নামে সোনারগাঁ এক্সপ্রেসের এক যাত্রী শেয়ারবাজার নিউজ বলেন, এবার স্টেশন এলাকায় শৃঙ্খলা রয়েছে। যাত্রী ছাড়া কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছেন না। আবার ট্রেনও যথা সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে এটা ভালো দিক, প্রশংসাযোগ্য।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার শেয়ারবাজার নিউজ বলেন, আজ যাত্রীর চাপ রয়েছে, আগামীকাল আরও চাপ বাড়তে পারে। যাত্রীর চাপ থাকলে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সবাই স্টেশনে প্রবেশ করেছেন। এখন পর্যন্ত আমাদের সবগুলো ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে।
স্ট্যান্ডিং টিকিটপ্রাপ্তি নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের আসন নির্দিষ্ট। আর নির্দিষ্ট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এ টিকিটের চাহিদার চেয়ে যাত্রী বেশি হওয়ায় অনেকে নাও পেতে পারেন।
এদিকে রোববার (১৬ এপ্রিল) দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সাতটি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সোমবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়। ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় নতুন রেক প্রস্তুত করা হয়।
বাতিল হওয়া ট্রেনটি বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ঢাকা স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। দুদিন পর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেনটির ঈদযাত্রা শুরু হলো। যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই এ ট্রেন চালু করা হয়।
ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ৭টি ট্রেন রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে থামছে না। ট্রেনগুলো সরাসরি কমলাপুর স্টেশনে চলে যাবে। ঈদযাত্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, পঞ্চগড়, নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না।
স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলাচল করবে। এবার ঈদযাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় গত ৭ এপ্রিল। ওইদিন বিক্রি হয় ১৭ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ৮ এপ্রিল ১৮ এপ্রিলের, ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হয় ২১ এপ্রিলের টিকিট।