আজ: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ইং, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩০ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

নিলামবর্ষে ১ হাজার ৭১২ কোটি টাকার চা বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সর্বশেষ নিলামবর্ষে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক চা নিলাম কেন্দ্রে ১ হাজার ৭১২ কোটি টাকার চা বিক্রি হয়েছে। এর আগের নিলামবর্ষের চেয়ে কম চা সরবরাহ করেও বড় অংকের আয় করেছেন চা বাগান মালিকরা। উৎপাদনের পাশাপাশি চাহিদা বাড়ায় কম চা বিক্রি করেও রেকর্ড আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

দেশের শীর্ষস্থানীয় একাধিক টি ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ নিলাম বছরে চট্টগ্রাম নিলামে ৮ কোটি ৬৬ লাখ ২২ হাজার ৮৪০ দশমিক ১ কেজি চা বিক্রি করা হয়। কেজিপ্রতি চায়ের গড় দাম পড়েছে ১৯৭ টাকা ৬৬ পয়সা। সর্বমোট বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৭১২ কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৪২৩ টাকার চা। ২০২১-২২ নিলামবর্ষে বিক্রি হয়েছিল ৮ কোটি ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৫৩১ কেজি, যা থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ৭০৮ কোটি ৭১ লাখ ৩৮ হাজার ৬৫১ টাকা। চট্টগ্রামে এ নিলাম পরিচালনা করে টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিটিএবি)।

২০২২-২৩ নিলামবর্ষে সবচেয়ে বেশি দামে চা বিক্রি করেছে মধুপুর চা বাগান। বাগানটি প্রতি কেজি চা গড়ে ৩২৪ টাকা ৮৬ পয়সায় বিক্রি করেছে। মোট বিক্রি করেছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৪৯৪ দশমিক ৪ কেজি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১০ টাকা ১০ পয়সায় ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭৭১ দশমিক ৬ কেজি চা বিক্রি করেছে কেদারপুর চা বাগান। তৃতীয় সর্বোচ্চ দাম কেজিপ্রতি ২৮১ টাকা ৪৩ পয়সায় ৮ লাখ ১৩ হাজার ১৬৪ দশমিক ৬ কেজি চা বিক্রি করেছে খৈয়াছড়া ডলু চা বাগান।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিলাম কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশের প্রায় সিংহভাগ চা বিক্রি হয় নিবন্ধিত ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে। নিলামে প্রতিযাগিতার কারণেই চা বিক্রিতে ন্যায্য দাম ও সরকারের শুল্ককর আদায়ে স্বচ্ছতা আসে। ২০১৯ সালে দেশে চা বিপণনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পাশাপাশি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চায়ের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নিলাম কেন্দ্র চালু করা হয়। এতে নিলামের পরিমাণ ভাগ হয়ে গেলেও চট্টগ্রাম নিলাম এখনো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। চট্টগ্রাম নিলামে সাড়ে আট কোটি কেজির বেশি চা বিক্রি হলেও শ্রীমঙ্গল নিলামে প্রতি নিলামবর্ষে গড়ে ২০ লাখ কেজির বেশি চা বিক্রি হয় না।

টিপিটিএবি সভাপতি মেজবাহুল হক বলেন, ‘‌দেশে ধারাবাহিকভাবে চায়ের উৎপাদন বাড়ায় নিলামে বিক্রিও বাড়ছে। শ্রীমঙ্গল নিলাম কেন্দ্রটি নতুন হওয়ায় এখনো চট্টগ্রাম চা নিলামেই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। শ্রীমঙ্গলে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মতো সেখানেও বিক্রির পরিমাণ বাড়বে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিলামে চা কেনার পর আরো ১৭ শতাংশ ব্যয় করে চা সংগ্রহ করতে হয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ শুল্ক, ১ শতাংশ বোকার্স প্রতিষ্ঠান ও বাকি ১ শতাংশ পায় বাংলাদেশ চা বোর্ড। এরপর এসব চা নির্দিষ্ট ওয়্যারহাউজ থেকে সংগ্রহ করে ব্লেন্ড ও মোড়কজাত করে বাজারে বিক্রির জন্য সরবরাহ করে কোম্পানিগুলো।

চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে দেশে চা উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি। ২০২১ সালে দেশে উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৬৫ লাখ, ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৪ লাখ এবং ২০১৯ সালে ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি। চলতি বছর দেশের ১৬৮টি বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা ক্ষেত্র থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। বছরের শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ও অনুকূল আবহাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.