মেটলাইফ ফাউন্ডেশন ও মাইক্রোসেভ কনসাল্টিং-এর যৌথ উদ্যোগে ঢাকায় আয়োজিত হলো আই থ্রি গ্লোবাল লার্নিং
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ইনোভেশন ইন ফাইন্যান্সিয়াল প্রোডাক্টস টু এনহান্স পিপল’স রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক আই থ্রি (ইনোভেট, ইমপ্লিমেন্ট, ইমপ্যাক্ট) গ্লোবাল লার্নিং অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন এবং এর পার্টনার অর্গানাইজেশন মাইক্রোসেভ কনসাল্টিং (এমএসসি) ও ইউএনসিডিএফ। এই আয়োজনে মালয়েশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ এই চারটি দেশের আর্থিক সহনশীলতা ও নিরাপত্তা বিষয়ে অর্জিত বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতাসমূহের ওপর আলোকপাত করা হয়। এ অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল উদ্ভাবনীমূলক পণ্যের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি থেকে আর্থিক সক্ষমতার (ফাইন্যান্সিয়াল হেলথ) প্রতিষ্ঠায় কী ধরনের কৌশল গ্রহণ করা উচিত তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সেবাদাতা, দাতাগোষ্ঠী ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলোচনাকে ত্বরান্বিত করা।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী – নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধিগণ, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, আর্থিক বিষয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও চিন্তাবিদ্গণ এ খাত সংশ্লিষ্ট যে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন তার মধ্যে রয়েছে – সচেতনতা বৃদ্ধিতে এবং আর্থিক সক্ষমতার উন্নয়নে আই থ্রি’র ভূমিকা; উদ্ভাবন, বিকাশ ও নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের (এলএমআই সেগমেন্ট) আর্থিক সহনশীলতা তৈরির প্রচেষ্টায় আর্থিক ইকোসিস্টেম থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা; ডিজিটাল ক্রেডিট, বীমা, রূপান্তর, সুরক্ষা ও গোপনীয়তার মতো আর্থিক খাতের যে বিষয়গুলো সামনের দিনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, সেসব বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো চিহ্নিত করা এবং আরও মনোযোগী হওয়া। আই থ্রি প্রোগ্রামের পার্টনারদের মধ্যে রয়েছে – অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই), শক্তি ফাউন্ডেশন, উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স লিমিটেড ও শীর্ষস্থানীয় ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা। প্রোগ্রামটি বাংলাদেশের ১ কোটি ২৮ লাখ গ্রাহকের জীবনে এবং পরোক্ষ ভাবে নিম্ন-আয়ের ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে সক্ষম।
মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনাম থেকে আসা অংশগ্রহণকারী সহ ৮০ জনেরও বেশি বিশেষজ্ঞগণ এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এটুআই’র পলিসি এডভাইজার, আনির চৌধুরী, মেটলাইফ বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আলা আহমদ, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সেলিম আর এফ হোসেন, ডবিøউই (উই) -এর প্রেসিডেট ও ই-ক্যাবের যুগ্ম সচিব নাসিমা আক্তার নিশা, ভিআইএফও’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ভিয়েত লিন ভুওং, এবং স্টার্টআপ ভিয়েতনাম ফাউন্ডেশনের ম্যান্ডি ন’গুয়েন। অনুষ্ঠানে এমএসসি’র পার্টনার অনিল কে গুপ্তের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক শাহ জিয়া-উল হক, শক্তি ফাউন্ডেশনের ইমরান আহমেদ, ওয়াইজ ভিয়েতনামের মিন ট্রাং ট্রান, পিওডি মালয়েশিয়ার নাদিয়া ইসমাদি ও এফএও বাংলাদেশের ইমানুন নবী খানসহ এ খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন।
মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আর্থিক খাতে কী ধরণের উদ্ভাবন প্রয়োজন, বৈশ্বিক মহামারি থেকে আমাদের প্রাপ্ত শিক্ষা এবং কীভাবে আমরা একট সহনশীল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারি, প্যানেল আলোচনায় সেসব বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, “আমরা দেখেছি যে আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের তুলনায় সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি, তাই আমরা ভাবতে শুরু করি যে আমরা এই দুটির মধ্যে কিভাবে সংযোগ তৈরি করতে পারি এবং সেখান থেকেই মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে এর ধারণাটি এসেছে। আমরা অল্প দিনের মধ্যেই এর সুফলও দেখতে পাচ্ছি। দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের এনজিও/এমএফআই রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, অর্থ প্রদানের অনুমোদনও সম্ভব হয়েছে।”
মেটলাইফ বাংলাদেশ-এর মুখ্য নির্বাহী আলা আহমদ বলেন, “বাংলাদেশে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নের প্রজেক্টসমূহ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, আর্থিক সক্ষমতা এবং সহনশীল কমিউনিটির অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। টেকসই ধারণাটি আমাদের ব্যবসায়িক কৌশল এর কেন্দ্রে রয়েছে এবং আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং মানুষের কল্যানে কাজ করে চলেছি।
আই থ্রি প্রোগ্রামে এমএসসি সংগৃহীত ফলাফলগুলি উপস্থাপন করার সময়, এমএসসি-এর অ্যাসোসিয়েট পার্টনার সুনীল ভাট বলেন, “বাংলাদেশ এবং ভিয়েতনামের এলএমআই এর প্রয়োজন গ্রাহককেন্দ্রিক এবং কম খরচে আর্থিক সমাধান। আই থ্রি প্রোগ্রামের মাধ্যমে মেটলাইফ, এমএসসি এবং বাংলাদেশে প্রোগ্রাম পার্টনারসমূহ, যেমন এটুআই, বিকাশ, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ডি মানি, আই পে, উই এবং ভিয়েতনামে মোমো, কেয়ারপ্লাস, ভিআইএফও এবং এসভিএফ সাশ্রয়ী সমাধানের জন্য ডিজিটাল চ্যানেল এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। ”
গত দশকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে। এখন আর্থিক সক্ষমতার দিকে মনোযোগ রেখে মূল অংশীদাররা কীভাবে সম্ভাব্য গ্রাহকদের অন্তর্ভুক্ত করা যায় তা জানতে কাজ শুরু করেছে, যেন গ্রাহক সেবাদাতা ও শিল্প উভয়ের প্রয়োজনই পূরণ করা সম্ভব হয়।