ইমরান খান জরুরিভিত্তিতে সরকারের সঙ্গে সংলাপ চান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৯ মে’র বিক্ষোভে সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তারে পাকিস্তানজুড়ে অভিযান এবং তার জেরে একের পর এক নেতা-কর্মীর দলত্যাগে ব্যাপক চাপে থাকা ইমরান খান দেশের সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরিভিত্তিতে সংলাপে বসতে চেয়েছেন।
শুক্রবার ইউটিউব লাইভে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি (সরকারের সঙ্গে) আলোচনায় বসতে চাই এবং তা যত দ্রুত হয় ততই মঙ্গল। পাকিস্তান নৈরাজ্যের দিকে যাচ্ছে এবং বর্তমানে দেশে যা চলছে, তা কোনো সমাধান তো নয়ই, উল্টো দেশকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ের পর সামরিক বাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়েই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এককালের সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খান। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং তার মধ্যেই গতবছর পার্লামেন্টের বিরোধী সদস্যদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন পিটিআই চেয়ারম্যান।
ক্ষমতা হারানোর জন্য ইমরান খান বরাবরই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কয়েকজন শীর্ষ জেনারেলকে দায়ী করেছেন। তবে দেশটির ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষে থাকা সামরিক বাহিনী বরাবরই তার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত ৯ মে আলোচিত আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর তার দল পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং সেই বিক্ষোভে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন সেনানিবাস ও সেনাদপ্তরে হামলা হয়।
এই ঘটনার পর হামলায় সংশ্লিষ্টদের ধরতে দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে সামরিক বাহিনী। এর মধ্যেই গত কয়েক দিন ধরে পিটিআই ত্যাগ করছেন একের পর এক শীর্ষ ও মধ্যমসারির নেতা। গ্রেপ্তারের আতঙ্কে অনেক কর্মী-সমর্থকও গা-ঢাকা দিয়েছেন।
নেতা-কর্মীদের দলত্যাগের প্রসঙ্গে ইমরান খান এর আগে বলেছেন, সরকারের নিপীড়ন ও চাপের মুখে তারা পিটিআই থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে যেসব নেতা-কর্মী দল ছেড়েছেন, তারা বলছেন— কোনো চাপের মুখে নয়, নিজের ইচ্ছেতেই দল ছেড়েছেন তারা।
আগামী নভেম্বরে পাকিস্তানের নির্বাচন হওয়ার কথা। শুক্রবারের বক্তব্যে ইমরান খান বলেন, যদি সাংবিধানিক সময়সূচি অনুযায়ী নির্বাচন হয়— সেক্ষেত্রে তার দল পিটিআই জিতবে এবং পিটিআই নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে বর্তমানে যে অভিযান চলছে— তা আসলে তার দলের জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।