আজ: সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ১লা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩০ মে ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

টেক্সটাইল খাতের বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে বিটিএমএ’র সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেক্সটাইল খাতের বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কিত বিষয়ে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছে বিটিএমএ।

আজ ৩০শে মে, ২০২৩ তারিখে টেক্সটাইল খাতের বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কিত বিষয়ে বিটিএমএ কতৃর্ক আহুত সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ’র প্রেসিডেন্ট জনাব মোহাম্মদ আলী খোকন বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন,বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পক্ষ থেকে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমার নিজের ও বিটিএমএ’র পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

আজকে অত্যন্ত দুঃখ ও ক্ষোভের সাথে টেক্সটাইল খাতের মিল পরিচালনায় আমরা দীর্ঘদিন যাবত যে সমস্যার মধ্যে রয়েছি তা আপনাদের মাধ্যমে সাধারণ জনগোষ্ঠীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে অবহিত এবং অনতিবিলম্বে যদি এ সমস্যার সমাধান না করা হয় তাহলে এ খাতটির কি পরিণতি হতে পারে সে সম্পর্কে আপনাদেরকে অবহিত করার জন্যই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি।

তিনি বলেন,আমাদের স্থানীয় টেক্সটাইল স্পিনিং ও উইভিং মিলগুলির বাজার মুলত: রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য সুতা ও কাপড় তৈরি ও তা সরবরাহ এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে স্থানীয় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠীর বস্ত্রের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সুতা ও কাপড় তৈরি এবং তা বাজারজাত করা। এক্ষেত্রে স্পিনিং ও উইভিং মিলগুলির সুতা ও কাপড়ের বাজার হচ্ছে: ঈদুল ফিতর, পহেলা বৈশাখের উৎসব ও ঈদকে কেন্দ্র করে যাকাতের কাপড় তৈরি ও তা বিক্রয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক আমাদের মিলগুলোর উৎপাদন ও পচিালনার অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত চরম পর্য্যায়ে উপনীত হয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে । টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা সৃষ্টির পেছনে আমরা যে বিষয়গুলোকে মূল কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছি তা হলো ঃ

( শুল্ক মুক্তভাবে আমদানিকৃত টেক্সটাইল পণ্যের স্থানীয় বাজারে অবাধ বিক্রয় ।

তিনি আরও বলেন,আমরা আশা করেছিলাম কভিড—১৯ পরবতীর্ সময়ের পর থেকে আমাদের মিলগুলি যারা স্থানীয় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠীর জন্য সুতা, কাপড় ও বিভিন্ন ড্রেস—ম্যাটেরিয়েল তৈরি করে, তারা পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাজারটি পাবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে তীব্র ডলার সংকট সত্ত্বেও এই ঈদুল ফিতরসহ সকল সময়ে বন্ডেড ওয়্যার হাউসের মাধ্যমে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী কতৃর্ক আমদানিকৃত বিদেশী সুতা, কাপড় বিশেষত: পাকিস্তানি ড্রেস ম্যাটেরিয়েলের দেশের বড় বড় শহরের শপিং মলগুলোতে অবাধে বিক্রয়ের কারণে স্থানীয় মিলগুলির অবস্থা আজ অত্যন্ত সংকটপন্ন ।

শুধু পাকিস্তান থেকেই নয় এর পাশাপাশি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন থেকে আসা সুতা, কাপড়সহ বিভিন্ন ড্রেস ম্যাটেরিয়েলও বিভিন্ন নগরী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন মোকামে তথা ঢাকার ইসলামপুরের বিক্রমপুর প্লাজায় (কোতয়ালী থানার পাশে) নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজার, গাউসিয়া, মাধবদী, বাবুরহাট, নরসিংদী ও সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যাপকভাবে বিক্রয় হয়েছে এবং হচ্ছে। আমরা জানিনা সরকার এর মাধ্যমে কি পরিমাণ রাজস্ব পেয়েছে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায় এর ফলে দীর্ঘ দিনে গড়ে ওঠা প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরে বিদ্যমান ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিটি আজ অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে রয়েছে।

গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সংকটসহ অস্বাভাবিক হারে গ্যাস ট্যারিফ ধার্যে্য সৃষ্ট সমস্যা নিয়ে বলেন,আপনারা জানেন আমাদের সদস্য মিলগুলির অধিকাংশই ভারী শিল্প ও ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন মেশিনারিজের সমন্বয়ে পরিচালিত।

এরই প্রেক্ষিতে এবং টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির এর কারণে এবং তৈরি পণ্যের তথা সুতা ও কাপড়ের মান অক্ষুন্ন ও মানসম্পন্ন ডাইং প্রিন্টিং ফিনিশিং এর জন্য মিলগুলি সার্বক্ষণিকভাবে চালু রাখতে হয়। সরকার যেহেতু নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছিলেন না তাই আমাদেরকে ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনে উৎসাহিত করেন। এ লক্ষ্যে আমাদেরকে বিদ্যুত জেনারেশনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক বিনিয়োগ করতে হয়। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে জেনারেটর এবং গ্যাস সংযোগের জন্য নিরাপত্তা জামানত হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়েছে। অন্যদিকে গ্যাস বিল হিসাবে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়।

তিনি বলেন,প্রাথমিকভাবে সরকার ক্যাপটিভ জেনারেশনের জন্য সহনীয় পর্যায়ে গ্যাস ট্যারিফ নির্ধারণ করেছিলেন যা ছিল উৎসাহজনক। পরবতীর্তে বিভিন্ন সময় গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়। আমাদের তথ্য মতে ২০০৯ সন থেকে ২০২৩ সনের জানুয়ারী পর্যন্ত গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৬১৭ শতাংশের মত [অহহবীঁৎব—ও সংযুক্ত]। অন্যদিকে ১ বছরের কম সময়ের মধ্যে গ্যাসের ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৮৬ শতাংশ। যতবারই গ্যাসের মধ্যে মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে তখন বলা হয়েছে যে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অব্যাহত রাখবেন। বর্তমানে গ্যাস ট্যারিফ ৩০ টাকা প্রতি কিউবিক মিটার। এছাড়াও গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত জামানত প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে, যদিও আমাদের আশ^স্ত করা হয়েছিল গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত কোনো নিরাপত্তা জামানত প্রদান করতে হবে না এবং গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন,কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধির আগে এবং ট্যারিফ বৃদ্ধির পরবতীর্ সময় থেকে গ্যাস সরবরাহ অবস্থা অদ্যাবধি অত্যন্ত শোচনীয় যা বর্তমানে অসহনীয় পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। একটি গ্রাফের মাধ্যমে বিভিন্ন জোনে অবস্থিত স্পিনিং মিলগুলির গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি দেখানো হলো। সমিতির সদস্য মিল থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় যে গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধির কারণে স্পিনিং মিলগুলির সুতার উৎপাদন খরচ প্রতি কেজিতে ক্ষেত্র বিশেষে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে মিলগুলি তাদের উৎপাদন ক্ষমতা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে উৎপাদন ক্ষমতার সম্পূর্ণ ক্যাপাসিটি ব্যবহার করতে না পারায় সুতার উৎপাদন খরচ আরেক দফা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সনের জানুয়ারী থেকে ২০২৩ সনের জানুয়ারী মাসে সুতার মূল্য পর্য্যায়ক্রমে হ্রাস পেয়ে এপ্রিল ২০২৩ এ সুতার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩০ কাউন্ট প্রতি কেজি ৩.১০ মার্কিন ডলার, যা একটি গ্রাফের মাধ্যমে দেখানো হলো [অহহবীঁৎব—ঠও] । উল্লিখিত কারণে স্বাভাবিকভাবেই মিলগুলির প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।

তাদের উৎপাদন অব্যাহত, শ্রমিক—কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন—ভাতাদি পরিশোধসহ ইউটিলিটি বিল নিয়মিত প্রদানের জন্য উৎপাদন খরচ অপেক্ষা ১৮ থেকে ২০ শতাংশ কম মূল্যে সুতা বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে গড়ে একটি মিলকে গ্যাস ব্যবহার না করেও বর্ণিত গ্যাস ট্যারিফে গ্যাস বিল প্রদান করার কারণে বছরে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা, অতিরিক্ত গ্যাস বিল প্রদান করতে হবে। এর সমষ্টিগত নেতিবাচক প্রভাব তথা আন্তর্জাতিক বাজার হতে অস্থিতিশীল মূল্যে  তুলা আমদানি, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় সৃষ্ট , গ্যাস ব্যবহার না করে অতিরিক্ত গ্যাস বিল ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা জামানত প্রদানের কারণে স্পিনিং মিলগুলির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ গত ১৫ মাসে ( জানুয়ারী ২০২২ — মার্চ ২০২৩) প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বলে আমরা মনে করি।

( রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের(ইডিএফ) অনিয়মিত বরাদ্দ, ইডিএফ ঋণের পরিমাণ হ্রাসসহ প্রয়োজনীয় ডলারের অভাবে কাঁচাতুলা আমদানির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক কতৃর্ক এলসি ওপেন না করায় সৃষ্ট সমস্যা ।

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) রপ্তানিমূখী টেক্সটাইল স্পিনিং মিলগুলির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর ইতিবাচক প্রভাব আমাদের টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাণিজ্যে দৃশ্যমান। কিন্তু বিগত প্রায় ১ বছর যাবত এ তহবিলটি থেকে সংশ্লিষ্ট মিলের অনুকূলে ঋণ বরাদ্দ অনিয়মিত এবং পর্যায়ক্রমে এ তহবিলটির আকার প্রতিটি স্পিনিং মিলের ক্ষেত্রে ৩০ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে ঋণের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় মিলগুলি তার পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের জন্য যে পরিমাণ কাঁচামাল তথা তুলা আমদানির প্রয়োজন হয় তা করতে পারছেনা অর্থাৎ মিলগুলির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শুধুমাত্র কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন ক্ষমতার বাইরে থেকে যাচ্ছে যা উৎপাদন খরচকে বৃদ্ধি করছে।

তিনি বলেন,বন্ডেড ওয়্যার হাউসের মাধ্যমে আমদানিকৃত সুতা ও কাপড়ের স্থানীয় বাজারে অবাধ বিক্রয়, গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না থাকায় উৎপাদন খরচের তুলনায় কম মূল্যে সুতা বিক্রয় ও মিলের উৎপাদন ক্ষমতার একটি উল্লেখযোগ্য অংশের ব্যবহার করতে না পারা, ইডিএফ সুবিধার সংকোচন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁচা তুলা আমদানির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংক কতৃর্ক প্রয়োজনীয় এলসি ওপেনে গড়িমসি সত্ত্বেও আমরা মিলগুলি কোনক্রমে চালু রেখেছি। আমাদের রপ্তানিমূখী স্পিনিং মিলগুলিতে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিমানের কটন সুতা এ সংকট সময়েও পর্যাপ্ত রয়েছে। আমরা মনে করি আমাদের তৈরি পোশক খাত যারা আমাদের চধৎঃহবৎ রহ চৎড়মৎবংং তারা এ খারাপ সময়ে আমাদের সহযোগিতা প্রদান করলে বর্তমান সংকট উত্তরণ কিছুটা হলেও সম্ভব হবে। অন্যথায় উক্ত পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আমরা মিলগুলো কতদিন চালু রাখতে পারবো বা এর কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা কতদিন ঝঁংঃধরহ করতে পারবো তা জানিনা। আমাদের জানামতে বাংলাদেশের টেক্সটাইল মিলগুলিতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক কতৃর্ক মিলগুলোতে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়াও আমাদের মিলগুলির সাথে একটি ইকোনোমি সাইকেল তথা ব্যাংক, বীমা, বন্দর, পরিবহণ সরাসরি সংশ্লিষ্ট।

বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি আজ একটি গভীর চক্রান্তের সম্মুখীন অর্থাৎ যে কোনভাবেই হোক না কেন, প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরের বিদ্যমান ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করে দেশটিকে আবারো সুতা, কাপড়সহ ড্রেস—ম্যাটেরিয়েলের জন্য পরনির্ভরশীল করার জন্য চক্রান্ত চলছে বলে আমরা মনে করি। সরকার ২০৩০ সনে টেক্সটাইল ও ক্লথিং থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছেন। আমরা নিশ্চিত টেক্সটাইল খাতে বিদ্যমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এবং আমদানি নির্ভর পণ্য দ্বারা তৈরি পোশাক রপ্তানির মাধ্যমে তা অর্জন সম্ভব হবে না । এর জন্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও ২০২৬ সনে বাংলাদেশ স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশে যাবার কারণে টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাতে যে চ্যালেঞ্জগুলি সৃষ্টি হবে, এখাতে বিদ্যমান সংকট অব্যাহত থাকলে তা অর্জন তো দূরে থাক, খাতটি বিদেশী অগ্রাসনে টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে !

আরও বলেন,আমাদের গৌরবময় সোনালী আঁশের কথা হয়ত আপনাদের মনে আছে, যা এখন শুধু অতীত। অথচ শুধুমাত্র দেশাত্মবোধ, সঠিক পলিসি না থাকার কারণেই আমাদের এই সোনালী আঁশের অতীতটি হারিয়ে গেছে। অথচ আমাদের পাটে অন্য দেশ আজ সমৃদ্ধ। আমি মনে করি অনুরূপ চক্রান্তটি টেক্সটাইল খাতের জন্যও করা হচ্ছে। ঈদুল আযহার খুব বেশি দেরি নেই। আমাদের জানা মতে বিটিএমএ’র সদস্যভুক্ত মিলগুলি পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় তাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন, মজুরি, বোনাসসহ প্রদান করেছে।

আমাদের তথ্যমতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিজনিত কারণে সুতা ও কাপড়ের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং বন্ডের মাধ্যমে আমদানিকৃত সুতা, কাপড় ও ড্রেস—ম্যাটেরিয়েলের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে স্থানীয় মিলগুলিতে সুতার মজুদ বৃদ্ধি পেয়ে মিলগুলির আর্থিক অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত নাজুক। ইতোমধ্যে অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে কয়েকটি মিল বন্ধ হয়ে গেছে। আরো মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী ঈদুল আযহার সময় মিলগুলি শ্রমিক—কর্মচারীদের বেতন, মজুরি বোনাসসহ পরিশোধ এবং একই সাথে প্রয়োজনীয় ইউটিলিটি বিল প্রদান করতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমরা আশংকিত।

বিটিএমএ’র রপ্তানিমূখী স্পিনিং মিলগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রপ্তানিমানের সুতা রয়েছে যা আমরা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে তৈরি পোশাক শিল্পে সরবরাহ সক্ষম। অন্যদিকে স্থানীয় মিলগুলি দেশের ১৭ কোটি জনগোষ্ঠীর সুতা ও বস্ত্রের সিংহভাগ পূরণ করতে পারে। তাই এ সেক্টরটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা অনতিবিলম্বে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলি গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন করছি। অন্যথায় এর দায়ভার সকলকেই নিতে হবে।

টেক্সটাইল খাতের স্পিনিং ও উইভিং মিল, যারা রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের প্রয়োজনীয় সুতা ও কাপড় দীর্ঘ দিন যাবত সরবরাহ করে আসছে, বর্তমান সংকট বিবেচনায় নিয়ে ও বিদ্যমান সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বিটিএমএ’র রপ্তানিমুখী স্পিনিং মিলে তৈরি সুতার ন্যুনতম একটি অংশ ব্যাক—টু—ব্যাক এলসি’র মাধ্যমে সংগ্রহের বিধান।

বন্ডের মাধ্যমে আমদানিকৃত সুতা, কাপড় ও ড্রেস—ম্যাটেরিয়েলের অবৈধ বিক্রয় বন্ধের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, মাধবদী, বাবুরহাট, নরসিংদী, বেলকুচি ও সিরাজগঞ্জের মোকামগুলিতে এখন থেকেই ঘন ঘন তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং এরূপ অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।

ইডিএফ সুবিধা অব্যাহত রাখাসহ কাঁচামাল আমদানির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এলসি খোলা অব্যাহত রাখার নির্দেশনা।নি

নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত। বর্ধিত গ্যাস ট্যারিফের উপর অতিরিক্ত নিরাপত্তা জামানত আদায় থেকে বিরত থাকাসহ গ্যাসের মূল্য সমন্বয়।

ব্যাংক ঋণের কিস্তি ও সুদ, অন্তবতীর্কালীন সময় তথা আগামী জুন, ২০২৪ পর্যন্ত ব্লক একাউন্টে রাখার সুযোগ প্রদানসহ পরবতীর্ সময় হতে সহজ কিস্তিতে প্রদানের সুবিধা প্রদান।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.