আজ: শনিবার, ০৪ মে ২০২৪ইং, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

বাজেটে সাত প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা দাবি ডিএসইর

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজেটে সাত প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা দাবি ডিএসইর নতুন অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে সাতটি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা দাবি জানিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবগুলো এরই মধ্যে পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনামন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি ও তথ্য জানান ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, রুবাবা দৌলাসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, সরকার হয়তো এবার আমাদের পুঁজিবাজারে করারোপ করেননি। তবে, অমাদের কিছু চাহিদা ছিল, সেটার বিষয়ে দৃষ্টি দেননি। এ বিষয়েও পরিকল্পনামন্ত্রী গত রোববার তার বক্তব্যে বলেছেন। আমাদের পুঁজিবাজার অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল উপকরণ। তাই আমাদের সাতটি প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, একটি কার্যকরী বন্ড বাজার অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা যায় তখন একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে। কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে লভ্যাংশের ওপর কর এক ধরনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপ। লভ্যাংশের ওপর উৎসকর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে৷

‘ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির প্রধান আয় (টার্ন-ওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেওয়া হয় তবে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে। তাই ট্রেকহোল্ডারদের লেনদেনের উপর উৎসে কর ০.০৫ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ করা যেতে পারে’ বলেন অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহাম্মদ হাসান বাবু।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পার্থক্য ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া এসএমই বোর্ডের অধীনে তালিকাভুক্ত এসএমই কোম্পানির করপোরেট কর হার ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য নূন্যতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

‘এতে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার হ্রাস করতে হবে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত উভয় কোম্পানির ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার হ্রাস করে ১০ শতাংশ করার সুপারিশ করছি’- যোগ করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ অন্যান্য উন্নত দেশের পুঁজিবাজারে বহুজাতিক কোম্পানিকে তাদের মোট শেয়ারের নূন্যতম ১০ শতাংশ তালিকাভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। অন্যথায় সেই সকল কোম্পানি সেই দেশে ব্যবসা করার অনুমতি পায় না। তাই আমাদের দেশেও পুঁজিবাজারের উন্নয়নকল্পে এইরূপ আইন প্রণয়ন করা এবং তার প্রয়োগ জরুরি।

পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডিএসই হবে অত্যন্ত টেকনোলজি নির্ভর। ডিএসই হওয়া দরকার সম্পূর্ণ পেপার লেস। আমি অল্প কিছুদিন হলো দায়িত্ব পেয়েছি তাই সব কাজ শুরু করতে পারিনি। তবে খুব শীঘ্রই আমরা কাজ শুরু করবো। ডিএসইকে আমরা আইটি খাতে সমৃদ্ধ করবো। এটাকে আমরা অনেক বেশি গুরুত্ব দিব। পুঁজিবাজার সাধারণ মানুষের বাজার। এটা গণ মানুষের বাজার। যেখানে তাদের রুজির জায়গা। এই বাজারে সরকারের সুদৃষ্টি অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছি। এর মাধ্যমে এই বাজেট জনগণের বাজেট হয়ে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মানুষ পুঁজিবাজার বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। তবে অনেকে পরিবেশের অপেক্ষায় আছে, আবার এই বাজারে ফিরে আসতে। বিশ্বে পুঁজিবাজারকে অর্থনীতির গতি বাড়ানোর ওপর কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ব্যাংক নির্ভরতায় পড়ে আছে।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমানের যে অবস্থা সেটা বেশি দিন থাকবে না। এই সমস্যা পার হয়ে যাবে। এই পুঁজিবাজার হবে সরকারের অর্থ সংগ্রহের অন্যতম মাধ্যম। তাই আমাদের সবাইকে এক হয় কাজ করতে হবে। তবেই এই বাজারের সফলতা সম্ভব।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে। এই পরিকল্পনার মধ্যে অন্যতম হলো আমরা জাপানি বিনিয়োগ আনতে কাজ করছি। আপনারা আশাহত হবেন না। কাজগুলো অগ্রগতিতে দেরি হচ্ছে তবে অপেক্ষা করলে আমরা ভালো কিছু পেতে যাচ্ছি। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা সুন্দর একটা পুঁজিবাজার পাবো। এছাড়াও এ বাজারের উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা অনেক। যা পেতে সাধারণ মানুষ মুখিয়ে আছে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমানের যে অবস্থা সেটা বেশি দিন থাকবে না। এই সমস্যা পার হয়ে যাবে। এই পুঁজিবাজার হবে সরকারের অর্থ সংগ্রহের অন্যতম মাধ্যম। তাই আমাদের সবাইকে এক হয় কাজ করতে হবে। তবেই এই বাজারের সফলতা সম্ভব।

ডিএসইর সাত প্রস্তাব
>> বন্ড থেকে সুদের আয়ের ওপর কর অব্যাহতি দেওয়া।
>> কোম্পানির লভ্যাংশ আয়ের ওপর উৎসে কর সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূলক কর হিসেবে বিবেচনা করা।
>> স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনের ওপর অর্পিত উৎসে কর হার হ্রাস।
>> এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার হ্রাস করা।
>> এক্সচেঞ্জের এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য হ্রাসকৃত হারে কর আরোপ।
>> তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার হ্রাস করা।
>> বহুজাতিক কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে উৎসাহিত করা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.