বীমা দাবি পরিশোধে ব্যর্থতা
তালিকাভুক্ত দুই বীমা কোম্পানিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ
নিজস্ব প্রতিবেদক : সময়মতো গ্রাহকের বীমা দাবির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে তালিকাভুক্ত সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এতে গ্রাহকের মধ্যে হতাশা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি বীমা খাতের ইমেজ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি দুটির পর্ষদে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, আইডিআরএর পরিচালক মো. শাহ আলমকে সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আইডিআরএর পরিচালক মো. আব্দুল মজিদ। আইডিআরএর কাছে এ দুই কোম্পানির গ্রাহক ক্রমাগত বীমা দাবির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছেন। ফলে বীমাগ্রহীতার স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে আইডিআরএ।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের লাইফ রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট কমেছে ৩৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এটি কমেছিল ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির জীবন বীমা তহবিলের আকার দাঁড়িয়েছে ৯০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে এ তহবিলের আকার ছিল ১৬৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
লোকসানের কারণে সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশের সুপারিশ করেনি কোম্পানিটির পর্ষদ। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোম্পানিটি ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০১৯ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। তার আগের হিসাব বছরেও কোনো লভ্যাংশ পাননি কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। ২০১৭ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৯০। এর ৩৮ দশমিক ২৯ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ৪৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স সর্বশেষ ২০১৯ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। এর পর থেকে ডিএসইতে কোম্পানিটির বার্ষিক ও প্রান্তিক আর্থিক ফলাফলের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনুমোদিত মূলধন ৭৫ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৬৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৬৮। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩৮ দশমিক ৮২ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১০ দশমিক ৭৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৫০ দশমিক ৪৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ডিএসইতে গতকাল প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ১০২ টাকা ৮০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৭১ টাকা ২০ পয়সা ও ১১২ টাকা।