আজ: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৯ জুন ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

রেমিট্যান্সে ঈদের হাওয়া, ১৬ দিনে এলো ১১২ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসছে ঈদুল আজহা। এর আগেই বাড়ছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ। কোরবানির এই ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ততই বাড়ছে।

চলতি জুন মাসের প্রথম ১৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১১২ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ১২ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। এছাড়া ১৬ দিনে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে তা প্রতিদিন গড় হিসাবে দেশে আসছে রেমিট্যান্স ৭ কোটি মার্কিন ডলার। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্স ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি মাসের ১৬ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২০ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮৫ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে নগদ প্রণোদনা পাওয়া যায়। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রবাসীরা দেশে পরিবার পরিজনের নিকট রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছর ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রবাসীদের উদ্দেশে জানায়, বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করুন, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য এভাবে আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রবাসীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। আরও জানায়, অবৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বিএফআইইউ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে – প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বাড়ানো, বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজিকরণ পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাথে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করেছে এবং সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকরা ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলারে বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.