বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা পাচ্ছেন সৈয়দ আবদুল হাদী
বিনোদন ডেস্ক: ‘মহানায়ক’ বুলবুল আহমেদ ২০১০ সালের ১৫ জুলাই না- ফেরার দেশে পাড়ি জমান । প্রয়াত বরেণ্য এই অভিনেতার স্মৃতি ধরে রাখতে তাঁর পরিবার ও বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রবীণ বরণীয় শিল্পীদের সম্মাননা দেওয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর এ ‘মহানায়ক বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা ২০২৩’ পাচ্ছেন বরেণ্য কন্ঠশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ফিরেই তিনি এ সম্মানানা গ্রহন করবেন বলে জানা গেছে।
আবদুল হাদী বলেন, ‘যেকোনো সম্মাননাই অনেক গৌরব এবং সম্মানের। বুলবুল আহমেদ সবার প্রিয় একজন মানুষ ছিলেন। এমন একজন মানুষের স্মৃতি সম্মাননা পদক পেয়ে যাচ্ছি ভেবে ভালো লাগছে’
ষাটের দশক থেকে শুরু হয়েছিল সৈয়দ আবদুল হাদীর গানের ক্যারিয়ার, যা অব্যাহত আছে এখনও। রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, ক্যাসেট, অনলাইনসহ প্রতিটি মাধ্যমে রয়েছে তার সফল বিচরণ। গানের পাশাপাশি টিভি অনুষ্ঠান প্রযোজনা, উপস্থাপনা, শিক্ষকতাসহ আরও বেশ কিছু পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তবে গান তার জীবনের বড় অধ্যায় রচনা করেছে। গানের জন্য পেয়েছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় একুশে পদকসহ নানা পুরস্কার ও সম্মাননা।
বুলবুল আহমেদ স্মৃতি সম্মাননা পদক দেওয়ার আয়োজন প্রসঙ্গে বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তাঁর মেয়ে ঐন্দ্রিলা বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির যাদের অবদান আছে ,তাঁদের স্মরণ করেই প্রতিবছর বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে সম্মাননা জানিয়ে আসছি। সৈয়দ আবদুল হাদীর মতো গুণী মানুষকে সম্মাননা দিতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে। আজ বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে সম্মনানা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি দেশের বাইরে থাকায় তাঁর হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। শিগগিরই বাসায় গিয়ে সম্মাননা পদকটি তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে।’ ২০১৫ সালে ‘বুলবুল আহমেদ ফাউন্ডেশন’ গড়ে তোলা হয়। এর আগে এই সম্মাননা পেয়েছেন অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চু, কেরামত মওলা,মিরানা জামান এবং এ টি এম শামসুজ্জামান।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের সাড়া জাগানো নায়ক বুলবুল আহমেদের জন্ম ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকায়। তাঁর আসল নাম তাবারক আহমেদ, তার পিতামাতা তাকে ‘বুলবুল’ বলে ডাকতেন। আবদুল্লাহ আল-মামুনের পরিচালনায় ‘বরফ গলা নদী’ ছিল অভিনেতার প্রথম টিভি নাটক । উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকগুলো হচ্ছে ‘মালঞ্চ’, ‘ইডিয়েট’, ‘মাল্যদান’, ‘বড়দিদি’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’। ধারাবাহিক ও খণ্ড নাটক মিলিয়ে চার শতাধিক নাটকে তাদের দেখা গেছে। ১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমামের [ইউসুফ জহির] ‘ইয়ে করে বিয়ে’র মাধ্যমে প্রথম সিনেমায় অভিষেক হয় তাঁর। ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’ ও ‘ দেবদাস’-এই দুটি চলচ্চিত্র দিয়ে দর্শকমনে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘মহানায়ক’, ‘সীমানা পেরিয়ে’, ‘সূর্য্যকন্যা’ ‘ধীরে বহে মেঘনা, জীবন নিয়ে জুয়া, রূপালী সৈকতে, বধু বিদায়, জন্ম থেকে জ্বলছি, ‘দি ফাদার’, ‘দুই নয়নের আলো’। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবে দেখিছেন মুন্সিয়ানা । তাঁর পরিচালিত ‘ওয়াদা’, ‘মহানায়ক’, ‘ভালো মানুষ’, ‘রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত ‘আকর্ষণ’, ‘গরম হাওয়া’, ‘কত যে আপন’ সিনেমাগুলো দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে।