কারসাজির সন্দেহে খান ব্রাদার্সের শেয়ার দর : তদন্তের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছে বলে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তাই বিএসইসি কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই)।
ডিএসইকে গত ১৩ জুলাই এক চিঠির মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় বিএসইসি। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিএসইসির সার্ভেলেন্স টিমের নজরে যান ব্রাদার্সের শেয়ারের অসাভাবিক লেনদেন ধরা পড়েছে। বিএসইসি প্রাথমিকভাবে মনে করছে কোম্পানিটির এমন অস্বাভাবিক লেনদেন এবং শেয়ারদর বৃদ্ধির মাধ্যমে কারসাজি করছে একটি পক্ষ।
তাই বিষয়টি নিশ্চিত হতে এবং অধিকতর তদন্তের লক্ষ্যে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠি ইস্যু হওয়ার ২০ কর্মদিবসের মধ্যে ডিএসইকে তদন্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের উৎপাদন বন্ধ। সহযোগি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য সাব কন্ট্রাক্টের কাজ করে কোনো রকমে চলছে-এমন খোলামেলা বক্তব্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষের। তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দরে যেন আগুন লেগেছে। একটি কারসাজি চক্রের দৌরাত্বে শেয়ারটির আচমকা এমন বেপরোয়া গতি।
চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১ টাকা ৯০ পয়সা। তারপর থেকেই উত্থান। তিন মাসের কিছু বেশি সময়ের ব্যবধানে শেয়ারটির দাম ২৭ টাকা ২০ পয়সা বা ২৭৪ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৭ টাকা ১০ পয়সায়।
কোন পথে যাবে শেয়ারটির এমন অস্বাভাবিক উত্থানের কারণ জানতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বারবার কোম্পানির কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছে। কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ বারবারই ডিএসইকে জানিয়েছে, অস্বাভাবিক এ দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই।
এ বিষয়ে কোম্পানি সচিব তপন কুমার সরকার বলেন, শেয়ারটির অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে কোনো কারণ তাদের জানা নেই।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির সময়ে কোম্পানিটির ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সময়ে বিদেশী ক্রেতাদের কাছ থেকে কোনো অর্ডার না পাওয়ায় কোম্পানিটির উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর খান ব্রাদার্স গ্রুপের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য সাব কন্ট্রাক্টের কাজ করে কোনো রকমে তারা চলছে। পেয়াজারে সূচকের মিশ্রাতায় বোর্ড সভার তারিখ জানিয়াছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ১ মাসে (জুলাই ২২ মার্চ ২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩০ পয়সা। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১৬ পয়সা।
সর্বশেষ ২০১২ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আগের বছর ২০২১ সালে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। তার আগের বছর ২০২০ সালে ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। তার আগের বছর ২০১৮ সালে কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি। তারও আগের বছর ২০১৮ সালে ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।