ব্র্যাক ব্যাংক রিডিং ক্যাফে’তে ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ নিয়ে আলোচনা
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ব্র্যাক ব্যাংক রিডিং ক্যাফে’র সদস্যরা সম্প্রতি বিখ্যাত চিন্তাবিদ ও লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়নের লেখা কালজয়ী বই ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’র ওপর একটি সাহিত্যসভার আয়োজন করে।
এই সাহিত্যসভায় বইটির সৃষ্টির পেছনে লেখকের অনুপ্রেরণা, বইটির বহুমুখী বিষয়বস্তু এবং লেখকের অসাধারণ গল্প বলার ধরন, যা এটিকে অন্যান্য ঐতিহাসিক সাহিত্যকর্ম থেকে আলাদা করেছে— এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ইতিহাস জুড়ে সম্পর্ক, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং রাজনীতির মারপ্যাঁচ সন্ধানের মাধ্যমে রাহুল সাংকৃত্যায়নের ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ মানব অস্তিত্বের এক রোমাঞ্চকর যাত্রার বিষয় আমাদের সামনে তুলে ধরে। প্রতিটি অধ্যায়ে কথোপকথন হিসেবে উপস্থাপিত ঐতিহাসিক এসব বিষয়াবলীর এমন ‘গল্পবলার ঢংয়ে’ বর্ণনা দেখে আলোচকরা মুগ্ধ হন। ২০ জুলাই এই সাহিত্য আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বইটি সম্পর্কে একজন সাহিত্যপ্রেমী পাঠক মন্তব্য করে বলেন, “এই বইটির স্বতন্ত্রতা কেবল এর ঐতিহাসিক বিষয় অনুসন্ধানেই নয়, বরং লেখক রাহুল সাংকৃত্যায়নের উদ্ভাবনী আখ্যান শৈলীতেও এর স্বতন্ত্রতা নিহিত রয়েছে” । “যদিও তিনি ইউভাল নোয়া হারারির পাণ্ডিত্যপূর্ণ পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারতেন, তথাপি এখানে লেখক চমৎকারভাবে গল্পবলার ধরনে জ্ঞানের এই অসামান্য সম্পদ সকলকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি পাঠকদের ভাবনার সাথে ইতিহাসের একটি গভীর সংযোগ তৈরি করার সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে বইটিকে আরও জ্ঞানগর্ভ এবং চিত্তাকর্ষক করে তুলেছে।”
আলোচনায় রাহুল সাংকৃত্যায়নের সাহিত্যজীবন নিয়েও আরও আলোকপাত করা হয়, যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পাঠকদের অনুপ্রাণিত ও বিমোহিত করার পেছনে তাঁর অমূল্য অবদানকে তুলে ধরা হয়েছে। জ্ঞান আহরণে তাঁর যে অতৃপ্ত তৃষ্ণা এবং অজানাকে জানায় তাঁর যে প্রবল আগ্রহ; এগুলোই তাঁকে শারীরিক ও বুদ্ধিদীপ্ত এক অবিশ্বাস্য ভ্রমণে নিয়ে গিয়েছিল, যা তাঁর সাহিত্য কর্মকে গভীরতা এবং সত্যতা দিয়ে সমৃদ্ধ করে তুলেছিল।
‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ বইয়ের প্রাপ্ত জ্ঞানের গভীরতা এবং ঐতিহাসিক অন্তর্দৃষ্টি আলোচকদের ভাবনার জগতে নিয়ে যায়। বইয়ের মূল ভাবনাগুলো সময় ও সংস্কৃতিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পাঠকদের জীবনে একটি স্থায়ী প্রভাব রেখে যায়।
আলোচনার উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিএল ‘রিডিং ক্যাফে’র আরেক সদস্য বলেন, “রাহুল সাংকৃত্যায়নের ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ মানব সভ্যতার যুগ যুগ ধরে চলে আসা ধারা গল্পের আকারে বলতে পারার এক প্রমাণ। এটি এমন একটি সাহিত্যকর্ম, যা আমাদের মানব ইতিহাসের বিশালতা এবং অগণিত গল্পের মাধ্যমে অজানা বিশ্বকে জানার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।”
আগস্ট মাসে ‘বিবিএল রিডিং ক্যাফে’ অধীর আগ্রহে আরেকটি বুদ্ধিদীপ্ত সাহিত্যসভার জন্য অপেক্ষা করছে, যেখানে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” পাঠ ও আলোচনার মাধ্যমে এই অবিসংবাদিত রাষ্ট্রনায়কের জীবন ও প্রজ্ঞা সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবে।
বিবিএল রিডিং ক্যাফে হ’ল বই পড়ুয়াদের একটি প্রাণবন্ত গ্রুপ, যা সাহিত্যের খ্যাতনামা কর্মগুলো আলোচনার মাধ্যমে জ্ঞান অন্বেষণের চেষ্টা করে। জীবন বদলে দিতে বইয়ের ভূমিকাকে গুরুত্ব দেয়। নিয়মিত সভার মাধ্যমে সদস্যরা অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ সংলাপে অংশ নেন, যা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশকে উত্সাহিত করে। সাহিত্যের বৈচিত্র্যময় সম্ভারকে প্রশংসা করে।