জাভেদ আখতারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেশন অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক: ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল) এর সিইও ও এমডি জাভেদ আখতারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস- ২০২৩’ এর ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ‘নেভিগেটিং দ্য পাথ টু প্লাস্টিক সাসটেইনেবিলিটি উইথ জাভেদ আখতার’; অর্থাৎ, ‘জাভেদ আখতারের সঙ্গে ‘প্লাস্টিক সাসটেইনিবিলিটির পথে দিকনির্দেশনা’ শীর্ষক এ সেমিনার ইউবিএল’র করপোরেট অফিসে অনুষ্ঠিত হয়।
জাভেদ আখতার পরিচালিত এ সেশনে দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিষয়ক ক্লাবের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে জানা ও এ সমস্যা সম্পর্কে আরও গভীরভাবে বুঝতে পারা চিল সেশনটির উদ্দেশ্য।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস এর ক্যাম্পেইন ‘#বিটপ্লাস্টিকপলিউশন’ প্রতিপাদ্যের আলোকে সেশনে অংশগ্রহণকারীরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলায় শিক্ষার্থীদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। সেশনের সঙ্গে একটি প্রশ্নোত্তর পর্বও আয়োজিত হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা সরাসরি জাভেদ আখতারের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ পান এবং প্লাস্টিক সাসটেইনেবিলিটি বিষয়ে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারেন।
এছাড়া, ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যরা শিক্ষার্থীদের প্লাস্টিক সাসটেইনেবিলিটি বিষয়ে উৎসাহিত করতে এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইউবিএল এর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন। এছাড়া, শিক্ষার্থীরা দেশের প্রথম রিফিল মেশিনের অভিজ্ঞতাও লাভ করেন। লিকুইড পণ্যের ব্যবহারে প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে আনতে বিগত বছর এ অভিনব উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়। এর ফলে গ্রাহকরা নিজের আনা বোতল বা কনটেইনারে ছাড়কৃত মূল্যে ইউনিলিভারের বিভিন্ন লিকুইড পণ্য রিফিল করতে পারছেন।
প্লাস্টিক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্যাকেজিং উপকরণ, যেটি ভোক্তাদের জন্যও পণ্য বহনে সাশ্রয়ী ও সহজে ব্যবহার উপযোগী। এছাড়া টেকসই ভবিষ্যত গড়তে প্লাস্টিক দূষণের এ ক্রমবর্ধমান প্রেক্ষাপটকে সার্কুলার ইকোনমির সঙ্গে যুক্ত করা অত্যন্ত দরকারি। ইউনিলিভার ২০২০ সালে নারায়ণগঞ্জে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং পরে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর সিইও ও এমডি জাভেদ আখতার বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, নিজস্ব পণ্যের উৎপাদনে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। প্লাস্টিক সাসটেইনিবিলিটি অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের এ যাত্রা ইউনিলিভারের গ্লোবাল ফ্রেমওয়ার্ক- ‘লেস প্লাস্টিক, বেটার প্লাস্টিক ও নো প্লাস্টিক’ নীতি দ্বারা পরিচালিত। বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনিলিভার ২০২৫ সালের অঙ্গীকারগুলো পূরণে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এর মধ্যে রয়েছে- পণ্য উৎপাদনে নতুন প্লাস্টিকের ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা, প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিকের প্রয়োগ ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি, নিজস্ব পণ্যের জন্য উৎপাদিত প্লাস্টিকের চেয়ে অধিক পরিমাণ প্লাস্টিক সংগ্রহ ও পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা, জিরো ল্যান্ডফিল ব্যবস্থাপনা এবং শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য, পুনঃপ্রক্রিয়াকৃত বা পচনশীল প্যাকেজিং নিশ্চিত করা। চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে আমাদের সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন ১০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে এবং বর্জ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দুই হাজার কর্মীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ২০২২ থেকে আমরা ৮ হাজার টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও শতভাগ পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করেছি।
‘এ অর্জন সার্কুলার ইকোনমি গড়ে তোলার লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও আগামী প্রজন্মের জন্য আরও পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পৃথিবী গড়ে তুলতে টেকসই ব্যবসায়িক চর্চা গড়ে তোলায় আমাদের প্রচেষ্টারই প্রকাশ ঘটায়। কিন্তু আমাদের পক্ষে এ সংকট একা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, এটি সুস্পষ্ট যে, পূর্ববর্তী প্রজন্মের প্লাস্টিকের অত্যধিক ব্যবহার এ উপকরণটিকে আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপে পরিণত করেছে। এতে শুধু বর্তমান প্রজন্মই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, একই সঙ্গে আগামী প্রজন্মের জন্যও এটি হুমকিরূপে দেখা দিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মকে এ সংকট সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে আমরা সম্মিলিতভাবে আশাবাদী যে- টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো আনতে সহযোগিতামূলক উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে। প্লাস্টিক বর্জ্যের নেতিবাচক প্রভাব প্রশমনে আমরা যৌথভাবে অভিনব সমাধান উদ্ভাবন ও বাস্তবায়নেও কাজ করতে পারি। সেই সঙ্গে, তরুণদের ভাবনার ক্ষমতায়ন এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে আরও টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব সমাজ বিনির্মাণে আমরা সক্ষম হব। টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সংকল্পবদ্ধ এ তরুণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এ আয়োজনে যুক্ত হতে পেরে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। এ সেশনে যুক্ত হওয়ার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ ভবিষ্যতেও প্লাস্টিক দূষণ সমস্যা হ্রাসে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাবে বলেও জানান তিনি।