জুলাইয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ১৭.৪৩ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। প্রথম মাসে নিট পোশাকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২.২৪ শতাংশ এবং ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি ১১.৫৪ শতাংশ। সবমিলিয়ে এই মাসে পোশাক রপ্তানিতে মোট প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭.৪৩ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বিজিএমইএ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রথম মাসে নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২.২৭ বিলিয়ন ডলারের। আর ওভেন পোশাক থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার। আর এ মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে মোট আয় হয়েছে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার। এদিকে শুধু জুলাই মাসে পোশাক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩.৭৮ বিলিয়ন ডলার। অর্জন হয়েছে ৩.৯৫ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ৪.৬৫ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২.২৭ বিলিয়ন ডলার।আর প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১১.২৪ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মোট ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর শীর্ষ ১২টি দেশে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ২০৪ কোটি ডলারের পণ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই বাজারগুলোতে রপ্তানি হয়েছিল ৪ হাজার ১১ কোটি ডলারের পণ্য। এসব দেশে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি বেড়েছে ১৯৩ কোটি ডলারের বেশি। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড যথাক্রমে- ৬.৮৮ শতাংশ, ০.৮৯ শতাংশ, ২৭.৮৭ শতাংশ, ৬.১৩ শতাংশ ও ১৩ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
দেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মোট রপ্তানির ৮৮ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক থেকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো আমেরিকার বাজারে রপ্তানি ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে গত অর্থবছরে রপ্তানি কমে ৯৭০ কোটি ডলারে নেমেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশের মতো কম।
ইউরোপের দেশ জার্মানি বাংলাদেশি পণ্যের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় বাজার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশটিতে ৭০৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই বাজারে রপ্তানি হয় ৭৫৯ কোটি ডলারের পণ্য। ২০২৩ অর্থবছরে জার্মানিতে মোট রপ্তানির ৯৪ শতাংশ ছিল তৈরি পোশাক। যার মূল্যমান প্রায় ৬৬৮ কোটি ডলার। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি হয় হোম টেক্সটাইল পণ্য।
২০২২-২৩ অর্থবছরে চীনে ৬৭৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ০.৮৯ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটিতে ৬৮৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরে দেশটিতে ২৮৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, ৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল ও ১১ কোটি ডলারের প্লাস্টিক রপ্তানি হয়।
ইউরোপ যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়া ও পোল্যান্ডেও রপ্তানি কমেছে। পোল্যান্ডে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৮৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাশিয়ায় ৪৬০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের বাজারে ৫৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনে ৩৬৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দেশটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৩৩ শতাংশ।
যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে গেলেও দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেনি। গত অর্থবছর দেশটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। ওই সময়ে অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয় ৪৮২ কোটি ডলারের পণ্য। ফ্রান্সের বাজারে ৩২৯ কোটি ডলার রপ্তানির বিপরীতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ শতাংশ। ইতালিতে ২৩৯ কোটি ও নেদারল্যান্ডস ২০৯ কোটি ডলারের পণ্য নিয়েছে। যার মধ্যে ইতালিতে ৪০ ও নেদারল্যান্ডসে পৌনে ১৮ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে।
ভারতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ, রপ্তানি হয়েছে ২১৩ কোটি ডলারের পণ্য। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাপানে ১৯০ কোটি ডলার, কানাডায় ১৭২ ও অস্ট্রেলিয়ায় ১২৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। জাপানে রপ্তানি ৪০ শতাংশ বেড়েছে, কানাডায় ১৩ শতাংশ ও অস্ট্রেলিয়ায় ৩৭ শতাংশের মতো বেড়েছে রপ্তানি।