চলতি বছর বিশ্ববাজারে সর্বোচ্চ দামে তেল বিক্রির রেকর্ড
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে সর্বোচ্চ দামে তেল বিক্রির রেকর্ড হয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে এর পেছনে রয়েছে জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় দুই সরবরাহকারী সৌদি আরব ও রাশিয়ার একটি কারসাজি। সেটি হচ্ছে তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাস।
যখন থেকে সৌদি আরব ও রাশিয়া তেলের দৈনিক উত্তোলন হ্রাস করতে শুরু করে তারপর থেকেই বিশ্ববাজারে বাড়তে থাকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার যে দামে তেল বিক্রি হয়েছে, তা ছিল চলতি ২০২৩ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের দিন বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দুই বেঞ্চমার্ক ক্রুড এবং ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারন্যাশনাল (ডব্লিউটিআই) উভয়ের দামই বেড়েছে।
প্রতি ব্যারেল (১৫৯ লিটার) ব্রেন্ট ক্রুড এইদিন বিক্রি হয়েছে ৯৩ দশমিক ৭০ ডলারে এবং প্রতি ব্যারেল ডব্লিউটিআই এদিন বিক্রি হয়েছে ৯০ ডলারে। আগের দিন বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে ১ দশমিক ৮২ ডলার বা শতকরা হিসেবে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
আর ডব্লিউটিআইয়ের দাম প্রতি ব্যারেলে বেড়েছে ১ দশমিক ৬৪ ডলার বা শতকরা হিসেবে ১ দশমকি ৮৫ শতাংশ।
অধিকাংশ পশ্চিমা বাজার বিশ্লেষকদের মতে, তেলের এই দাম বেড়েছে সৌদি ও রাশিয়ার ‘পরিকল্পিত’ কৌশলের কারণে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষণকারী সংস্থা পিভিএমের কর্মকর্তা তামাস ভারগা বলেন, “বাজারের এই চাঙ্গাভাব স্বাভাবিক নয়। এটা একটি পরিকল্পিত কৌশলের অংশ এবং যারা এই কৌশল করছে, তারা আসলে বাজারের মানসিকতা নিয়ে খেলছে।
বাজার বিশ্লেষণকারী অপর সংস্থা অ্যাগেইন ক্যাপিটালের কর্মকর্তা জন কিলডাফ বলেন, “অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্যের কারণে তেলের বাজারে এই চাঙ্গাভাব আসেনি; বরং যেটাকে আমরা চাঙ্গাভাব বলছি, সেটি আসলে সরবরাহের সংকট। ”
“আর এই সংকটের জন্য দায়ী রাশিয়া ও সৌদি। এমন এক সময়ে তারা তেলের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন শীতের কারণে আর কিছুদিনের মধ্যেই পশ্চিমা দেশগুলোতে তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে,” যোগ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ২০২২ সালের শুরুর দিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দামে উর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছিল। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে চীন এবং ডলার সাশ্রয়ের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলো তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায় গত বছর জুন মাস থেকে অপরিশোধিত তেলের বাজারে মন্দাভাব শুরু হয়।
মাসের পর মাস ধরে এই মন্দাভাব চলায় আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে তেল উত্তোলন ও রফতানিকারক দেশগুলো। এরপর তেল উত্তোলনকারীদের সংস্থা ওপেক প্লাস দৈনিক উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্র: রয়টার্স