আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার |

kidarkar

আগামী পাঁচ বছর হবে বাংলাদেশের জন্য সোনালী সময়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত ভালো করছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে এই খাতের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারা ধরে রাখবে। অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আগামী পাঁচ বছর হবে বাংলাদেশের জন্য সোনালী সময়।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজারের ইনানিতে অবস্থিত সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)’র যৌথ উদ্যোগে এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে এই খাতের উন্নয়ন সাধনের অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করছে। বর্তমান চ্যালেঞ্জিং সময়ে বিনিয়োগকারীরা বেশি মুনাফা লাভ করতে না পারলেও যেন কোনভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন না হোন তার জন্য বিএসইসি কাজ করছে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের শিল্পায়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার হচ্ছে, যা অদূর ভবিষ্যতে আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

পুঁজিবাজারকে দেশের অর্থনৈতিক পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানগুলোর সুনাম অর্জন প্রয়োজন এবং এ খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দরকার। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে আরও বিকশিত করতে এ খাত সম্পর্কে সকলকে আরও জানানো এবং প্রচার প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের অধিক রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ-সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো উচিত। মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতকে বিকশিত করতে দেশের পুঁজিবাজারের ইক্যুইটি মার্কেটেরও উন্নয়ন প্রয়োজন। তার জন্য দেশের পুঁজিবাজারের ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তি প্রয়োজন। ভালো কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারের নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও সচেষ্ট হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি’র কমিশনার মো. আবদুল হালিম বলেন, আমাদের জাতীয় অর্থনীতির তুলনায় দেশের পুঁজিবাজার এখনও অনেকখানি পিছিয়ে রয়েছে। আমরা দেশের পুঁজিবাজারকে উন্নত ও স্মার্ট পুঁজিবাজারে পরিণত করতে কাজ করছি। তিনি অংশীজনদের সকলকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে এই খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কথা বলেন। অর্থনৈতিক সকল সূচকে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী করতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিএসইসি’র কমিশনার ড. মিজানুর রহমান তথ্যবহুল উপস্থাপনায় বাংলাদেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি এশিয়া ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের সাথে দেশের মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন এবং সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে দেশে এই খাতকে আরও বর্ধিত করা যায়, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। দেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের সম্প্রসারণের জন্য আগামীতে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিধিবিধান ও নীতি সংশ্লিষ্ট পুনর্গঠন প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিএসইসি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজনদের সাথে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিস্তার ঘটানোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে বিকশিত করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির উন্নয়নে সকল অংশীজনের সাথে একসাথে কাজ করবে। দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করতে ডিএসই কাজ করে যাচ্ছে।

বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের ব্যাপ্তি আরও বাড়বে। এ ছাড়া, দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

কনফারেন্স অনুষ্ঠানে বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনা আলোচক হিসেবে অংশ নেন অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডসের (এএএমসিএমএফ) প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) চেয়ারম্যান মো. শামীম আহসান, ডিএসই’র চিফ রেগুলেটরি অফিসার (সিআরও) আবু তাহের মোহাম্মদ খায়রুল বাশার এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক।

প্যানেল আলোচনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য কালেকটিভ বিনিয়োগ স্কিমের তারল্য এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচকবৃন্দ আগামীতে দেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড খাতের সুযোগ ও সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.