দেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্পের প্রথম টাকা টু রুপি রপ্তানি লেনদেন সম্পন্ন করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতে রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার রপ্তানি সহজতর করতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি-এর সাথে ভারতীয় রুপিতে লেনদেন সম্পন্ন করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্পের জন্য প্রথম টাকা টু রুপি রপ্তানিকৃত এই লেনদেনটি বাণিজ্য খাতে একটি মাইলফলক অর্জন করেছে।
প্রতিটি দেশের নিজ নিজ মুদ্রায় পরিচালিত এই রপ্তানি লেনদেনটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন পথ উন্মোচন করেছে। ভারতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি-এর গ্রাহকদের ভারতীয় রুপিতে লেনদেনের সুযোগ প্রতিষ্ঠানটির প্রসার ও সামগ্রিক রপ্তানিতে বৈচিত্র্যেময়তার সাথে এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। ভারতীয় রুপিতে সরাসরি চালান প্রদানের সুবিধা বৃদ্ধির ফলে লেনদেনের খরচ হ্রাস পায়। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করে টাকা টু রুপিতে লেনদেন ও বাণিজ্য আঞ্চলিক শক্তিকে ক্ষমতাশীল করে এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের গ্লোবাল নেটওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করে থাকে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “আজকের এই অনুষ্ঠানটি অনুপ্রেরণা, সহযোগিতা, উদ্ভাবনের একটি মূর্তমান প্রতীক এবং আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের। এতে লেনদেনের সময়রেখা ও রুপান্তরকে অনেক সহজতর করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য এটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করছে। এই প্রচেষ্টায় ওয়ালটন-এর সাথে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।”
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ বলেন, “আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লেনদেনে বাংলাদেশ মার্কিন ডলার ব্যবহার করছে। তবে, বর্তমান অর্থনীতির তারল্যতা উপশমে ও মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরতা কমাতে বাংলাদেশ ও ভারত তাদের নিজ নিজ মুদ্রায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালু করেছে। এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে ওয়ালটন ভারতীয় রুপি নির্ধারিত রপ্তানি শুরু করেছে।”
তিনি আরও বলেন যে, “ওয়ালটন প্রতি বছর প্রায় ১ বিলিয়ন টাকার ফ্রিজ, কম্প্রেসার, ফ্যান এবং অন্যান্য পণ্য ভারতে রপ্তানি করে। ওয়ালটনের এই রপ্তানি আয় ব্যবহার করে বাংলাদেশ ভারত থেকে একই পরিমাণ পর্যন্ত আমদানির অর্থ রুপিতে পরিশোধ করতে পারে। এটি মার্কিন ডলারের উপর লেনদেনের নির্ভরতা ও সময় সাশ্রয় করবে। এছাড়াও, উভয় দেশের আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা বৈদেশিক মুদ্রা এই দ্বিগুণ রূপান্তর এড়াতে উপকৃত হবেন।”
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি-এর মধ্যে লেনদেন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং হেড অব ক্লায়েন্ট কভারেজ, কর্পোরেট, কমার্শিয়াল অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং এনামুল হক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং হেড অফ ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটস মুহিত রহমান-সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দীর্ঘ ১১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকই দেশের একমাত্র বহুজাতিক ব্যাংক। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক জাতির কল্যাণে, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে, এবং পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে দেশের বাণিজ্য ও উন্নয়ন যাত্রার দীর্ঘস্থায়ী গর্বিত অংশীদার।
১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ওয়ালটন গ্রুপের ২২টি উৎপাদন কারখানাসহ ৩০ হাজারেরও বেশি লোক কাজ করে যাচ্ছে। বাৎসরিক দশ মিলিয়ন ইউনিট উৎপাদন ক্ষমতা দিয়ে ওয়ালটন গ্রুপ ৮০টিরও বেশি দেশে তাদের অবস্থান প্রকাশ করেছে। ওয়ালটন গ্রুপ ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি বর্তমান বাজারে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান ধরে রেখে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছে।