আজ: রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪ইং, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার |

kidarkar

সবজির দাম বেড়েছে ও আকাশ ছোঁয়া !

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারে এমন কোনো সবজি নেই যারা দাম বাড়তি না। বলতে গেলে বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। তুলনামূলক কম দাম বলতে শুধু মাত্র পেঁপে আর মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা। আর বরবটি, টমেটো তো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এছাড়া সেঞ্চুরি ক্রস করে ১২০-এ গাজর, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। সব মিলিয়ে অন্যান্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে সব সবজির দামও বলতে গেলে আকাশ ছোঁয়া।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি, ফলে সবজি কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

শুক্রবারের বাজারে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, যার মধ্যে লম্বাকৃতির বেগুন প্রতি পিস ৬০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৬০ টাকায় এবং ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি পিস জালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বাজারে সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দাম বলতে পেঁপে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কাঁচা কলা প্রতি হালি (৪ টি) ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, মূলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১২০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা আর কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা আর আগের আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। অন্যদিকে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। এছাড়া ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।

রাজধানীর মহাখালী বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী হেলাল আহমেদ বলেন, মাছ-মাংসে তো আমরা সাধারণ ক্রেতারা হাত দিতেই ভয় পাই। এখন আবার সবজির দামও বাড়তি, বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। আগে যে সবজি কিনেছি এক কেজি সেটা দামের কারণে বাধ্য হয়ে এখন আধা কেজি কিনি। সব ধরনের সবজির দাম যদি এত বাড়তি হয়, তাহলে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা এগুলো কীভাবে কিনবে?

রাজধানীর গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারে এসেছেন খোরশেদ আলম। তিনি ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তিনি বলেন, বাজারে সবকিছুর এত দাম বেড়েছে যে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের জন্য যেন কিছুই কেনার নেই। এমনকি সবজি কিনতে এসেও বিচার বিবেচনা করতে হয় কোন সবজিটা কিনব। সব সবজিগুলোরই বেশি দাম। বরবটি, করলা, বেগুন কিনতে যেয়ে দেখলাম বেশি দাম, তাই বাধ্য হয়ে তুলনামূলক কম দামি সবজি পেঁপে আর মিষ্টি কুমড়া কিনলাম। অন্যদিকে এক ব্রয়লার ছাড়া অন্যান্য সব কিছুর দামই বাড়তি। যে কারণে মাছ-মাংস কেনাও যায় না। আগে তাও সবজির দাম কিছুটা কম ছিল, অন্তত সবজি কিনে খাওয়া যেত। এখন তো দাম বাড়তির কারণে সবজি কেনারও উপায় নেই।

সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে মহাখালী কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা হুমায়ন কবীর বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাজারে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে। এর মূল কারণ- এখন অনেক সবজির মৌসুম না, ফলে এগুলোর দাম বেশি। মূলত শীতকাল আসার আগ পর্যন্ত সবজির দাম এমন বাড়তিই থাকে। কারওয়ান বাজারসহ অন্যান্য সব পাইকারি বাজারে সব ধরনের সবজিই প্রতি পাল্লায় দাম বেড়েছে। সে কারণে আমাদের কেনার খরচ আগের চেয়ে বেশি লেগে যাচ্ছে। এরপর তা পরিবহনসহ শ্রমিক খরচ, রাস্তা খরচ, যেখানে দোকান বসাচ্ছি তার খরচ সব মিলিয়ে খুচরা বাজারে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে।

তিনি বলেন, দাম বাড়ার কারণে আমাদের মতো ছোট খুচরা ব্যবসায়ীদের ব্যবসা কমে গেছে। কারণ মানুষ কম সবজি কিনছে বেশি দামে। আগে একজন ক্রেতা যেখানে এক কেজি করে প্রতিটা সবজি নিতো, এখন অনেকেই নেয় আধা কেজি। ফলে আগে যেখানে এক পদের সবজি ২০ কেজি নিয়ে আসতাম, এখন নিয়ে আসি ১০ কেজি ৫ কেজি করে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.