আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার |

kidarkar

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বাংলাদেশ উজরা জেয়াকে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা। অন্যথায় এ অঞ্চল নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উজরা জেয়া জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ৭৮তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ফাঁকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে তারা বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন।

বৈঠকে উজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তারা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য ১১৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের উন্নত জীবিকা নিশ্চিত করতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেন জেয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করার আগে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা উচিত, অন্যথায় এ অঞ্চল নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ, রোহিঙ্গারা এরই মধ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান এবং মাদক কারবার।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ, তাদের প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। তারা সেখানে কোনো ভবিষ্যৎ অনুভব করছে না।

শেখ হাসিনা গাম্বিয়ার আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) করা মামলায় আন্তর্জাতিক সমর্থনও চেয়েছেন। এরই মধ্যে সাতটি দেশ ফ্রান্স, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক ও মালদ্বীপ এ মামলার প্রতি সম্মতি দিয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন উজরা জেয়া।

উজরা জেয়া বলেন, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন চান। বাংলাদেশও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় বলে বৈঠকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে না। সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষত রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা প্রযোজন।

তিনি বলেন, আমরা জনগণের ভোটে বিশ্বাস করি। জনগণের ভোট ছাড়া কেউ ক্ষমতায় আসতে পারে না। ভোট কারচুপির মাধ্যমে কেউ ক্ষমতায় এলে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

আগামী সাধারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে আমরা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাই। তবে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ দেশই নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অনুমতি দেয় না।

দেশের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশিরা কিছু ভালোভাবে বর্ণনা করলে ভালো হবে, অন্যথায় ভুল হবে। আমরা বিদেশিদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে দেশ চালাতে চাই না।

গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যালিস ওয়াইরিমু এনদেরিতুও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সহায়তা চান।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.