আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৭ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

বিশ্বকাপে আরেক অঘটন নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে

স্পোর্টস ডেস্ক: অবিশ্বাস্য! অভাবনীয়। ডাচ জুজু থেকে বের হতেই পারছে না প্রোটিয়ারা। এ যেন অসম্ভবকেই সত্যি করলো নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে জিতে উড়তে থাকা পরাক্রমকশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে আরও একটি অঘটনের জন্ম দিলো নেদারল্যান্ডস।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের হারালো ডাচরা। বাভুমার দলকে ৩৮ রানে হারালো ডাচরা। অথচ ম্যাচ শুরুর আগে কে ভেবেছিল এই ডাচরা এভাবে দাপটের সঙ্গে প্রোটিয়াদের হারাবে?

২৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার বাভুমা ও ডি কক। প্রথম ওভারটিই মেডেন আদায় করে নেন আরিয়ান দত্ত। ধীরে ধীরে রানের খাতা খুলতে থাকে প্রোটিয়ারা।

প্রথম ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৩২ রান করে। কিন্তু ৮ম ওভারেই প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন অ্যাকারম্যান। বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি করা ডি কককে মাত্র ২০ রানেই ফিরিয়ে দেন এই পেসার। শর্ট ফাইনে ডাচ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসের হাতে ধরা পড়া তিনি।

ডি ককের বিদায়ের পর যেন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন-আপ। ১০ম ওভারের প্রথম বলেই ৩১ বলে মাত্র ১৬ রান করা অধিনায়ক বাভুমাকে বোল্ড করেন দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া ক্রিকেটার ভ্যান ডার মারওয়ে।

১১তম ওভারে দ্বিতীয় বলে প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মারকরামকে বোল্ড করেন ভ্যান মেকেরেন। এরপরের ওভারেই আবার প্রোটিয়া শিবিরের দম্ভ চূর্ণ করে দেন ভ্যান ডার মারওয়ে। দারুণ ফর্মে থাকা ভ্যান ডার ডুসেনকে ব্যক্তিগত ৪ রানে ফিরিয়ে দেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যে প্রোটিয়ারা ৩৬ রানে বিনা উইকেট থেকে ৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে।

এরপর ক্রিজে এসে ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার কিছুটা বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সাময়িক প্রতিরোধও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি ডাচ বোলাররা। দুইজনের ৪৫ রানের জুটিতে ফাটল ধরান ভ্যান বিক। ফাইন লেগে ভিকরমজিৎ সিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২৮ বলে ২৮ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।

আবারো বিপর্যয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের ২৫তম ওভারর শেষ বলে ২৫ বলে ৯ রান করে কোনোমতে টিকে থাকা মার্কো ইয়ানসেনকে বোল্ড করেন অভিজ্ঞ পেস বোলার ভ্যান মেকেরেন।

তখনও ক্রিজের একপ্রান্তে আগলে ছিলেন ডেভিড মিলার। কোয়েটজেকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ৩৬ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু দলকে আর বিপদে রেখে তিনিও বিদায় নেন। ৫২ বলে ৪৩ রান করে ভ্যান বিকের বলে বোল্ড হন এই বা হাতি মারকুটে ব্যাটসম্যান।

মিলারের আউটের পর কার্যত শেষ হয়ে যায় প্রোটিয়াদের ম্যাচে ফেরা। কোয়েটজে ২৩ বলে ২২ রান করলে তা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে প্রোটিয়াদের। তবে ডাচদের বিরুদ্ধে অলআউটের লজ্জায় ডুবতে হয়নি প্রোটিয়াদের। নির্ধারিত ৪৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। কেশব মাহারাজ ৪০ রানে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন। ডাচদের হয়ে ভ্যান বিক ৩ উইকেট, ভ্যান ম্যাকেরেন, ভ্যান মারওয়ে, ডি লিড ২টি করে উইকেট নেন।

এর আগে বৃষ্টির কারণে কার্টেল ওভারের ম্যাচে ৪৩ ওভার করে পায় দুই দল। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ সামলে ৮ উইকেটে ২৪৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহই দাঁড় করিয়ে ফেললো নেদারল্যান্ডস। অর্থাৎ জিততে হলে ৪৩ ওভারে ২৪৬ করতে হবে প্রোটিয়াদের।

ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে যথাসময়ে টস অনুষ্ঠিত হয়নি। শেষ পর্যন্ত একঘণ্টা বিলম্বে টস হলেও ম্যাচ মাঠে গড়াতে সময় চলে যায় দুই ঘণ্টারও বেশি। ফলে ওভার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৭টি করে।

টস জিতে নেদারল্যান্ডসকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ২৭ ওভারে ১১২ রান তুলতে ৬ উইকেট হারিয়ে বসেছিল ডাচরা। সেখান থেকে তারা দাঁড় করালো ২৪৫ রানের পুঁজি, ৪৩ ওভারেই!

নেদারল্যান্ডসকে এই বড় রান এনে দেওয়ার কারিগর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ৬৯ বলে ১০ চার আর ১ ছক্কায় ৭৮ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন তিনি।

এছাড়া শেষদিকে রয়্যালফ ফন ডার মারউই ১৯ বলে ২৯ আর আরিয়ান দত্ত ৯ বলেই ৩ ছক্কায় খেলেন অপরাজিত ২৩ রানের ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার লুঙ্গি এনগিদি, মার্কো জানসেন আর কাগিসো রাবাদা নেন দুটি করে উইকেট।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.