আজ: সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৭ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার |

kidarkar

স্থানীয় শিল্পকে শক্তিশালী করতে কর কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবদেক : দেশে উৎপাদন হয় এমন মধ্যবর্তী কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে দেওয়া শুল্ক ও কর অব্যাহতির সুবিধা পর্যালোচনা এবং সম্ভবত তা কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলেছে, দেশজ প্রস্তুতকারক খাত ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পকে শক্তিশালী করতেই এই পদক্ষেপ বলে জানা গেছে।

এনবিআর-এর কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সংযোজিত, কিন্তু উৎপাদিত নয় – এমন পণ্যের ক্ষেত্রেও মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) এবং শুল্ক সুবিধা কমাতে একটি নীতিমালা তৈরি করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

কর্মকর্তারা বলেন, এই ধরনের আর্থিক সুবিধা হ্রাস স্থানীয় প্রস্তুতকারক খাতকে শক্তিশালী করে আমদানি-নির্ভরতা কমাবে; যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ওপরও চাপ কমাবে।

এর আগে রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো.রহমাতুল মুনিম বলেছিলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা যায় এমন পণ্য আমদানিতে দেয়া কর অব্যাহতির সুবিধা হ্রাস করা হবে।

এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কর অব্যাহতির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, পোশাক ও টেক্সটাইল, অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ ও হাইটেক শিল্পের জন্য সম্মিলিত কর অব্যাহতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

মূলত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুই বছর আগে স্থানীয় শিল্পের জন্য কিছু সুবিধা বাড়ায় এনবিআর। আগামী বাজেটে বা তার আগেই নতুন কর নীতিমালা প্রকাশ করা হতে পারে। এজন্য খাত-ভিত্তিক পণ্য ও সেবার শ্রেণিকরণ করে দেশের উৎপাদন সক্ষমতা ও মান যাচাই করবে এনবিআর।

এর আওতায়, কাঁচামাল আমদানির কর রেয়াত সুবিধা পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট হারে স্থানীয় মূল্য সংযোজন অর্জনের শর্ত পূরণ করতে হতে পারে স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে।

খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বেশ দেরীতে নেওয়া হলেও এটি একটি সঠিক পদক্ষেপ, যা আমদানি-নির্ভরশীলতা কমিয়ে স্থানীয় শিল্পকে শক্তিশালী করার অঙ্গীকার তুলে ধরছে।

দেশের শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমানে পোশাক ও টেক্সটাইল খাতসহ বেজা, বেপজা ও এর বাইরের শিল্প প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরণের পণ্য আমদানিতে কর ও শুল্ক অব্যাহতি পেয়ে আসছে। মোবাইল ফোন, হাইটেক পণ্য, ফ্রিজ, এসি, মোটরসাইকেল, মোটরগাড়িসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক সুবিধা পান উদ্যোক্তারা। গামেন্টস শিল্পের মধ্যবর্তী কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি, রড-সিমেন্টসহ ভারি শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতেও মেলে এ বিশেষ সুবিধা।

অনেক আগে থেকে এসব সুবিধায় আমদানি হলেও, বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়েও কিছু শিল্প গড়ে উঠেছে। তবে তাদের অসম প্রতিযোগীতার মুখোমুখি হতে হয়, বলে জানান তারা।

বাংলাদেশের প্রকৌশল শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ইলেকট্রিক মোটর, ফ্যান, কেবলস, সকেটসহ ইলেকট্রিক প্রায় সব পণ্য এবং মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশের বহু কিছু এখন দেশে উৎপাদন হয়। উৎপাদিত এসব পণ্যে ভ্যাট ও উৎস করসহ ১৮ থেকে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়। এর বিপরীতে, বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো মূলধনী যন্ত্রপাতি হিসেবে এসব পণ্য ১ থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে নিয়ে আসে। ফলে স্থানীয় ব্যাকওয়ার্ড- লিংকেজ শিল্প (প্রতিযোগিতায়) টিকতে পারছে না।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.