প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
সামান্য ঘটলেই বড় বিবৃতি দেন, সুশীল বাবুরা এখন কোথায়?
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ থেকে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, পুলিশ হত্যা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি পেতেই হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা আছেন—সামান্য ঘটনা হলেও বড় বড় বিবৃতি দেন; তারা এখন কোথায়? তাদের তো এখন আমরা দেখি না, সুশীল বাবুরা এখন কোথায়?
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন,আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা আছেন—সামান্য ঘটনা হলেও বড় বড় বিবৃতি দেন; তারা এখন কোথায়? তাদের তো এখন আমরা দেখি না, সুশীল বাবুরা এখন কোথায়?হঠাৎ করে তারা কোথায় চলে গেল। এই যে ৩০ জন সাংবাদিক আহত, তাদের কাছ থেকে তো কোনো কথা শুনি না। বাংলাদেশের সুশীল বাবুরা কোথায়? সুশীল বাবুদের কাজ কী? আওয়ামী লীগের কিছু হলে, আওয়ামী লীগের দোষ খুঁজে বেড়ানো? মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের কোনো অপরাধ নেই। আমাদের সুশীল বাবুরা এখন চুপচাপ। তাদের কাছ থেকে এখন কোন বিবৃতিও দেখি না, কিছুই দেখি না। এখন কেন মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হয় না? তারা কেন এখন চুপ হয়ে আছে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা যারা ঘটিয়েছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে তাদের আহত করেছে, পুলিশকে হত্যা করেছে, তাদের ওপর আক্রমণ করেছে, শাস্তি এদের পেতেই হবে।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও—এটাই বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র; হত্যা গুম খুন এটাই তাদের অভ্যাস। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, এটা খুবই দুঃখজনক।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের নির্যাতন খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা।
তিনি বলেন, ’৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা সরকারে ছিলাম। সরকারে আসার পর মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। প্রতিটি ক্ষেত্রকে বেসরকারির জন্য উন্মুক্ত করে দিই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। করোনা শুরু হওয়ার পর বাইরে যাওয়া একবারে বন্ধ ছিল। সাক্ষাৎকার বন্ধ ছিল। মনে হয় এখনো একটা বড় জেলে বন্দি। আজ আসতে পেরেছি, সেজন্য শুকরিয়া।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতি যেন যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে, এটাই ছিল তার (বঙ্গবন্ধু) লক্ষ্য। জাতির পিতার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। তিন বছর সাত মাস তিনি সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের সাংবাদিক এবং কলাকৌশলীসহ মানুষের কর্মসংস্থান যাতে ব্যাপকহারে হয় তার জন্য বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিই। আমাদের একটি মাত্র টেলিভিশন ছিল। যারা সরকারের থাকত তাদেরই অধীন ছিল। কে আমার গুণগান গাইল, কে আমার গুণগান গাইল না, সেটা আমি দেখি না। আমি সব কিছু মুক্ত করে দিই। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকারে আসি তখন তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করি। তথ্য কমিশন গঠন করি, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে মানুষ যত বেশি, সংবাদপত্রও তত বেশি। অনেক উন্নত দেশ কিংবা ধনী দেশেও এত সংবাদপত্র নেই। বর্তমানে আমাদের পত্রিকার সংখ্যা ৩২৪১টি। অনুমোদিত নিউজ পোর্টাল রয়েছে ৩৮৭টি। বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি ৩৩টি টেলিভিশন সম্প্রচারে রয়েছে।
টেলিভিশন মালিকদের উদ্দেশ করে সরকারপ্রধান কলেন, টেলিভিশনের মালিকরা কিন্তু টেলিভিশন চালাচ্ছে। এত সহজ করে দিলাম মালিকরা কেন কল্যাণ ট্রাস্টে অনুদান দেয় না, সেটাই আমার প্রশ্ন। কয়েকজন দিয়েছে কিন্তু বেশির ভাগ মালিকই দেয়নি। সেটা হিসাব করা যায়– কারা দিল, কারা দেয়নি। না দিলে বন্ধ করে দিতে পারি, সেটা করতে চাই না। বন্ধ করার ব্যবস্থা কিন্তু আছে। কে কে দিয়েছে সেই হিসাবটা আমাকে দিয়েন, কল্যাণ ট্রাস্টে ফান্ড দেবে তারপর চলবে। এখানে মালিক আছে, তাই একটু বললাম, দেখি ভয় পেয়ে কিছু দেয় নাকি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের দ্বিতীয়টা উৎক্ষেপণের ব্যবস্থা নিয়েছি।