যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়া মাত্রই গাজায় আবারও হামলা শুরু হবে: ইসরায়েল
![](https://www.sharebazarnews.com/wp-content/uploads/2023/11/gazaa-20231107092441.jpg)
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টানা দেড় মাসের সংঘাতের পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে সংঘাতে শুরু হওয়া এই মানবিক বিরতি চলবে চারদিন। অবশ্য এই সময়ের পরও বিরতি আরও বাড়ানোর আশাপ্রকাশ করা হচ্ছে।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, চলমান বিরতি শেষ হওয়ার পরপরই তারা গাজায় আবারও হামলা শুরু করবে। রোববার (২৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের সঙ্গে সংঘাতে চলমান সাময়িক মানবিক বিরতি শেষ হওয়ার পরপরই ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় পুনরায় হামলা শুরু করবে বলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান শনিবার জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ হারজি হালেভিকে উদ্ধৃত করে ইসরায়েলি ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন জানিয়েছে, ‘(মানবিক বিরতির পর) আমরা অবিলম্বে গাজায় আমাদের রণকৌশলে ফিরে যাব, হামাসকে নির্মূল করব এবং গাজায় আটক অধিকাংশ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য উল্লেখযোগ্য চাপ প্রয়োগ করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুক্রবার হামাসের হাতে আটক নারী ও শিশুদের প্রথম ব্যাচের বন্দিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। শনিবার কয়েক ঘণ্টা পর, আমি আশা করি বন্দিদের দ্বিতীয় ব্যাচ মুক্তি পাবে।’
এর আগে হামাসের সঙ্গে চারদিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরই ফের গাজায় হামলা চালানো শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যাল্যান্ট। সেসময় তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না; হামাসকে ধ্বংস করা এবং বন্দিদের ইসরায়েলে ফিরিয়ে আনা আমাদের লক্ষ্য। গাজায় ২৪০ জন বন্দি রয়েছে— যেটি আমরা মানতে পারব না এবং সহ্য করব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘চারদিনের যুদ্ধবিরতি একটি স্বল্পকালীন বিরতি। এই যুদ্ধবিরতির পর আমরা পূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়ে অভিযান চালাব।’
এদিকে হামাস গত শুক্রবার চার দিনের মানবিক বিরতির প্রথম দিনে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ৩৯ ফিলিস্তিনির মুক্তি নিশ্চিত করেছে এবং বিনিময়ে ২৪ ইসরায়েলি ও বিদেশি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। এরপর শনিবার ইসরায়েলের ১৩ বন্দিসহ আরও ১৭ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। মুক্তি পাওয়া অন্য চার বন্দি থাইল্যান্ডের নাগরিক।
যদিও দ্বিতীয় দফায় এই মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। তবে বেশ কয়েক ঘণ্টার বিলম্বের পর ওই ১৭ জনকে মুক্তি দেয় হামাস। ইসরায়েল চলমান যুদ্ধবিরতির একটি শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলে হামাস অভিযোগ তোলার পর বন্দি মুক্তিতে ওই বিলম্ব হয়।
তবে এই বৈরিতা শনিবার কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় সমাধান করা হয়। ইসরায়েল এখন তার কারাগার থেকে ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যায়নি না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৫৪ জনে পৌঁছেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই ৬ হাজারের বেশি।
এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে চার হাজারেরও বেশি নারী রয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৩০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।