ভয়াবহ ভূমিকম্প
চীনে মাইনাস ১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনে গত ১৩ বছরের মধ্যে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১১৮ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে আরও ২২০ জন। স্থানীয় সময় সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর আগে ২০১০ সালে দেশটির কিংহাই প্রদেশের ইউশুতে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ৭ দশমিক ১ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে দুই হাজার ৭০০ জন নিহত হয়।
এদিকে ভূমিকম্পের মাত্রার দিক থেকেও সোমবারের ভূমিকম্পটি ছিল গত এক দশকের বেশি সময়ে দ্বিতীয় শক্তিশালী ভূমিকম্প। ২০১০ সালের পর এটাই সবচেয়ে তীব্র ভূমিকম্প বলে মনে করা হচ্ছে। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির গানসু প্রদেশে সোমবার মধ্যরাতে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পের সময় প্রতিবেশী কিনঘাই এলাকায়ও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সিচুয়ান প্রদেশে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে নিহত হন ৬৬ জন।
চীনে ভূমিকম্প একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ। প্রায়ই বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট-বড় ভূমিকম্প আঘাত হানছে।
এদিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশী জিনজিয়াংয়ে অপর একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ওই ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। তবে ওই ভূমিকম্প থেকে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
গানসু প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সেখানে পুরোদমে উদ্ধার-অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের একটি দরিদ্র অঞ্চল গানসু। ওই প্রদেশের জিশিশান কাউন্টি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ দশমিক ২ বলে জানালেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ বলছে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) এবং প্রায় ১০টি আফটার শক অনুভূত হয়েছে।
এদিকে চীনের যে অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে সেখানে তাপমাত্রা এখন মাইনাস ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
ভূমিকম্পে ৫ হাজারের বেশি বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ এবং পানির সরবরাহও ব্যহত হচ্ছে। ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ভূমিকম্পটি বেশ শক্তিশালী ছিল।