ইন্ট্রাকোর বাণিজ্যিক কার্যক্রম ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসি ভোলা থেকে ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও আশপাশের শিল্পাঞ্চলে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) পরিবহনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে কোম্পানিটির আয় বাড়বে এবং চাহিদার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করবে বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে চলতি বছরের ২১ মে ঢাকা ও আশপাশের শিল্পাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ দেয়ার জন্য ইন্ট্রাকো ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তির সাত মাস পর ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
ইন্ট্রাকো জানিয়েছে, ভোলা থেকে সিএনজি আকারে আনা গ্যাস শুরুতে তিতাসের আওতাধীন শিল্প-কারখানায় চাহিদা অনুসারে সরবরাহ করা হবে। শিল্পে দৈনিক পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ দেয়ার সক্ষমতা তৈরি করেছে ইন্ট্রাকো। সফলভাবে এর পরীক্ষা শেষ হয়েছে।
ভোলা থেকে গ্যাস আনার জন্য ইন্ট্রাকো ভোলার ইলিশা ঘাট থেকে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাট, এরপর ফেরি থেকে চৌমুহনী-ফেনী-কুমিল্লা-মেঘনা গোমতী ব্রিজ হয়ে গাজীপুরের কাঁচপুর-ভুলতা-কাঞ্চন ব্রিজ পার হয়ে গাজীপুর ও ময়মনসিংহের ভালুকা রুট ব্যবহার করবে।
এই রুটে শুরুতেই দৈনিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পরিবহনের পরিকল্পনা ইন্ট্রাকোর। দ্বিতীয় ধাপে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইন্ট্রাকো সিএনজি আকারে ভোলার গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রতি ঘনমিটারের মূল্য নির্ধারণ করেছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। যদিও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া বর্ধিত দর অনুসারে শিল্পে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা। সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪৩ টাকা। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির পক্ষে কোম্পানি সচিব শাহ আলম মোল্লা এবং ইন্ট্রাকোর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াদ আলী ওই চুক্তিতে সই করেন।
ভোলায় এই পর্যন্ত দেড় ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আবিষ্কার হলেও বৃহৎ আকারে সেখানে ব্যবহারের সুযোগ নেই। আবার গ্যাসের সঞ্চালন লাইন না থাকায় এ গ্যাস জাতীয় গ্রিডেও সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের শুরুর দিকে ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে পরিবহন করে শিল্প-কারখানায় সরবরাহ দেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার।
বিষয়টি নিয়ে পেট্রোবাংলা কাজ শুরু করে। এরপর নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তথ্য-উপাত্ত যাচাই শেষে সিএনজি আকারে গ্যাস পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের অনুমোদিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার। রিজার্ভে রয়েছে ২১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৭৫০।
কোম্পানিটির শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩০.০৬ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪.৬৩ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীর কাছে ০.০৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৫৫.২৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩১ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৫১ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৪৬ পয়সায়।